‘সেভাবে’ লড়াই গড়ে তুলতে না পারার আক্ষেপ জোনায়েদ সাকীর

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চলমান ‘ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী’ শাসনের বিরুদ্ধে ‘সেভাবে’ লড়াই গড়ে তুলতে না পারার আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে প্রয়াত শ্রমিক নেতা ছিদ্দিকুল ইসলামের স্মরণে নাগরিক শোকসভায় তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।

জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘ছিদ্দিকুল ভাই চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান শ্রমিক নেতা ছিলেন। বন্দর থেকে টিঅ্যান্ডটি, এরপর পরিবহন শ্রমিকদের। কিন্তু এখন ট্রেড ইউনিয়ন হয়ে গেছে নামকাওয়াস্তে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন মানে হচ্ছে সরকারের দখল করা ইউনিয়ন। আর বেসরকারি জায়গায়, সেখানে শিল্প পুলিশ, সরকার ও স্থানীয় মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন করা রীতিমতো যুদ্ধের শামিল।’

‘পাকিস্তান আমলেও কিন্তু ট্রেড ইউনিয়ন করা গেছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা যখন রক্তের ওপর দিয়ে রাষ্ট্র কায়েম করছিলেন, তারা কি কখনো ভেবেছিলেন ট্রেড ইউনিয়ন করা অসম্ভব ব্যাপারে পরিণত হবে ? এটা রীতিমতো মাফিয়াদের সঙ্গে যুদ্ধ করার মতো বিষয়ে পরিণত হবে।’

এরশাদের আমলের চেয়েও ভয়াবহ স্বৈরশাসন চলছে অভিযোগ করে সাকী বলেন, ‘জেনারেল এরশাদের আমলেও লড়াই হয়েছে। সেই লড়াইয়ে ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবী, কৃষক সংগঠন ছিল। আজ আপনি কল্পনা করতে পারেন, বর্তমান সময়ে এসে এই যে আমরা আরও ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী শাসনের মধ্যে আছি, সেখানে সেভাবে একটা লড়াই গড়ে তুলতে পারছি ! কোনো পেশাজীবী অবস্থান থেকে প্রতিবাদ আসছে, প্রতিবাদ আসা সম্ভব? সবার চাকরির ওপর থাবা মেরে আছে সরকার।’

‘কিন্তু আমরা যদি সমষ্টিগতভাবে ব্যর্থ হয়ে যায়, তাহলে দেশেই থাকতে পারবেন না। অন্ততঃ মর্যাদা নিয়ে থাকতে পারবেন না। বাংলাদেশের কোনো নাগরিক মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে থাকতে পারবে না। এই ফ্যাসিবাদি সরকারের সঙ্গে আপস না করে কেউ যদি মর্যাদার সঙ্গে থাকতে চায়, তার ওপর জুলুম নেমে আসবে। এখন লড়বেন কি না আপনি ঠিক করেন।’

তবে দমনপীড়ন-গুলি চালিয়ে সরকার সংগ্রাম ঠেকাতে পারবে না, এমন আশাবাদের কথা জানিয়ে জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘পথ এখনো আপনাদের সামনে আছে। নিজেদের যদি সম্মানজনক উত্তরাধিকার তৈরি করতে চান, তাহলে ক্ষমতা ছাড়েন। পদত্যাগ করে অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন। এরপর নির্বাচন মোকাবেলায় আসেন। না হলে জনতার লড়াই স্ফূলিঙ্গ থেকে দাবানলে পরিণত হবে, ঠেকানোর ক্ষমতা আপনাদের নেই।’

সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বক্তব্য রাখেন।facebook sharing button

messenger sharing button
twitter sharing button
মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.