মানিলন্ডারিং নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের ক্ষোভ

সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহসিকতা দেখাতে পারলেও মানিলন্ডারিং বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম ও কাজী ফিরোজ রশীদ।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি মানিলন্ডারিং বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। এ সময় সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ক্রান্তিলগ্ন পার করছে। বাংলাদেশের টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ডিসেম্বরের দুই সপ্তাহে চট্টগ্রামের তিনটি কোম্পানিকে তিন হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ ছাড় দেওয়া হয়েছে। আর পাঁচটি ইসলামিক ব্যাংককে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ সুদে ১৪ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক সুদে ঋণ নেয় না। ঋণ দেওয়ার কথা না, তারা ইসলামী ব্যাংক, তাদের নীতি আদর্শে সুদ নামক কোনো বস্তু নেই। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০ হাজার কেটি টাকা ছাপিয়েছে। এই টাকা সিস্টেম থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে বেরিয়ে গেছে।’

জাপা নেতা আরও বলেন, ‘বিশেষ বিশেষ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সাহসিকতা দেখেছি। দেখেছি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে যেসব দেশ হস্তক্ষেপ করেছে তার বিরুদ্ধে উনি কথা বলেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলেছেন। এটা আমাদের ভালো লাগে। পাশাপাশি যখন দেখি এরকম একটি শক্তিশালী সরকারের প্রধান মানি লন্ডারিংয়ের ব্যাপারে কিছুই করতে পারেন না তখন নিজেকে অসহায় মনে হয়। হিসাব বলে এই পর্যন্ত কয়েক লাখ হাজার কোটি টাকা মানিলন্ডারিং হয়েছে। বাংলাদেশের দুই বছরের বাজেটের সমপরিমান টাকা মানিলন্ডারিং হয়েছে। কাজেই আশা করব সরকার এ ব্যাপারে কঠিন হবে। এ বিষয়ে সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আর্থিক খাতের অনিয়মে কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না। ১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যায়। আর সামান্য ঋণের জন্য কৃষকদের কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে জেলখানায় নেওয়া হয়। টাকা পরিশোধ করার পরও তার মুক্তি পেতে সময় লাগে। অথচ এই কৃষক উৎপাদন করে, খাদ্য যোগায়। এটা সরকারকে ভাবতে হবে। কৃষকের মাজায় দাড়ি দিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।’

এ সময় তিনি হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট ও পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং মানি লন্ডারিং বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.