কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর নামে চসিক লাইব্রেরি

চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘির দক্ষিণ পাড়ে শতবর্ষী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পাবলিক লাইব্রেরিটি একুশের প্রথম কবিতার রচয়িতা মাহবুব উল আলম চৌধুরীর নামে করা হয়েছে।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ‘মাহবুব উল আলম চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পাবলিক লাইব্রেরি’নামে এ পাঠাগারের নতুন ফলক উন্মোচন করেন মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করুন।

আপনাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠুক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, গোলাম মোহাম্মদ জুবায়ের, আবদুস সালাম মাসুম, পুলক খাস্তগীর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত, কবি মাহবুব উল আলমের জামাতা স্থপতি ইশতিয়াক আহমদ আলম চৌধুরী, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, আঞ্চলিক কর্মকর্তা রেজাউল করিম, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু প্রমুখ।

একুশের প্রথম কবিতার কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী রাউজান উপজেলার গহিরায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। বাংলাকে রাষ্টভাষা করার দাবিতে চট্টগ্রামে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ এবং এমএ আজিজ। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’ কবিতা রচনা করেন। এ কবিতাটি ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রচিত প্রথম কবিতা হিসেবে স্বীকৃত।

ঢাকায় গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ২৩ ফেব্রুয়ারি সমগ্র চট্টগ্রামে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। লালদীঘি মাঠে বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার জনসমুদ্রে ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ। এর কয়েকদিন পরেই তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করে। মাহবুব উল আলম চৌধুরী আমৃত্যু নিজশহর চট্টগ্রাম ও সমগ্র বাংলাদেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।

জানা যায়, লালদীঘি মাঠের দক্ষিপাশে সড়ক সংলগ্ন লালদীঘির দক্ষিণ পাড়ে ১৮৫৮ সালে নির্মিত হয়েছিল একটি ভবন। শুরুতে এটি ছিল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়। ১৮৬৩ সালের ২২ জুন চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল কমিটি গঠিত হলে এই ভবনে শুরু হয় কার্যক্রম। ১৯০৪ সালে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালটি আন্দরকিল্লায় স্থানান্তরিত হলে ‘চিটাগাং মিউনিসিপ্যাল লাইব্রেরি’ প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতার পর লাইব্রেরির নাম পাল্টে হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পাবলিক লাইব্রেরি।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.