মেয়েকে ফিরে পেতে মরিয়া বাবা আদালতে এসে জড়ালো সংঘর্ষে, শেষমেশ হাজতে মামা

সাতকানিয়া আইনজীবি মিলনায়তনে এই ঘটনা ঘটে-

 

সাতকানিয়া প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আইনজীবি সমিতি কার্যালয়ের ভেতর বাদী-বিবাদীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে লোহাগাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের জসিম(৫৫) নামে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এনাম নামে এক যুবককে আদালত প্রাঙ্গণে দায়িত্বে থাকা পুলিশও আইনজীবীরা আটক করেছেন।

 

রবিবার(৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতিতে এই ঘটনা ঘটে।

 

জানা গেছে, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের গোলমাহমুূদ পাড়ার বাচা মিয়ার ছেলে প্রবাসী জসিম উদদীন বিয়ে করেন একই এলাকার এনামুল হকের বোন নাহিদা আক্তারকে।
কিন্তু পারিবারিক ভাবে জসিমের সাথে বনিবনা না হওয়ায় জসিম নাহিদা আক্তারকে তালাক দেয়, তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর ঘরে জসিমের একটি কন্যা সন্তানও থাকেন। ওই সন্তানকে সাথে নিয়ে নাহিদা আক্তার বাপের বাড়ি চলে যায়।

পরে নাহিদা আক্তার ওই কন্যা সন্তানকে সাথে নিয়ে লোহাগাড়া উপজেলার সাউন্ড হেলথ হাসপাতালের ডাক্তার পারভেজ সাজ্জাদকে দ্বিতীয় স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেন, অপরদিকে ডাক্তার পারভেজ সাজ্জাদেরও এটা ছিল দ্বিত্বীয় বিয়ে। এদিকে কন্যাটির আসল পিতা জসীম উদদীন স্ত্রীকে ছেড়ে দিলেও মেয়েটিকে নিজের হেফাজতে রাখতে মরিয়া।

তাই মেয়েটির প্রকৃত পিতা জসিম উদদীন নিজ কন্যাকে নিজের ঘরে রাখার জন্য প্রাক্তন স্ত্রীকে আর স্ত্রীর ভাইকে বিবাদী করে লোহাগাড়া সহকারি জজ আদালতের দ্বারস্থ হন।

 

এই বিষয়ে আদালতে জসিমের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবি মো৷ দেলোয়ার হোসেন। আজ রবিবার মামলার ধার্য তারিখ ছিল।

আইনজীবীর সহকারী মঞ্জুর বলেন, আদালত নির্দেশনাও দিয়েছেন যে প্রতিদিন ২ঘণ্টা করে যাতে পিতাকে তার চেনার জন্য তার কন্যাকে দেয়া হয়।

তিনি আরও জানান মামলা শেষে আইনজীবী মিলনায়তনে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে এনামসহ আরো কয়েকজন মামলার বাদী জসিম উদ্দীনকে আঘাত করলে আমরা জসীমকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাই। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে পুলিশ আদালত থেকে এনামকে আসামী হিসেবে গ্রহন করে থানায় নিয়ে গেল।

 

এদিকে আদালতের ভেতরেই আইনজীবি সমিতির মিলনায়তনে মারামারির ঘটনায় চারদিকে হৈ চৈ পড়ে গেছে, শুরু হয়েছে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা।

 

 

এই বিষয়ে সাতকানিয়া আইনজীবি সমিতির সাধারণসম্পাদক ও সরকারি আইনকর্মকর্তা মেজবাহ উদদীন আহমদ চৌধুরী কচির বলেন, আদালতের ভেতর আইনজীবি সমিতিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি অনভিপ্রেত। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত আমরা এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এবং এই ঘটনায় যাতে ভবিষ্যৎ এ আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

 

এই ঘটনায় আটককৃত এনামকে নিতে আসা সাতকানিয়া থানার এসআই প্রবীর বলেন, ঘটনায় মামলা রুজু করা হচ্ছে সাথে আসামী এনামের মোটর সাইকেলও জব্দ করা হয়েছে।

 

 

এদিকে-আইনজীবি সমিতির ঘটনায় আহত জসীমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মো. মিরাজ।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.