মফস্বল সাংবাদিকতা চ্যালেঞ্জিং পেশা: সৈয়দ আক্কাস উদ্দীন

মোঃ জাহেদুল ইসলাম: সাংবাদিকতা পেশা এমনিতেই চ্যালেঞ্জের, তার ওপর আবার মফস্বল সাংবাদিকতা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় সাংবাদিকতায়। বিভিন্ন প্রকার হুমকি, মামলা-হামলার শিকার হতে হয় যে পেশায় সেটাই হলো সাংবাদিকতা।

শুক্রবার (৩ মার্চ) রাতে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, লোহাগাড়া উপজেলা কমিটির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সাতকানিয়া সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম সংবাদের সম্পাদক ও প্রকাশক সৈয়দ আক্কাস উদ্দীন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সমাজের দর্পণ বা আয়না বলা হয়। তবে হলুদ সাংবাদিকদের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। এরা প্রকৃত সাংবাদিকদের সম্মানহানি করে থাকে। জেলা, উপজেলা পর্যায়ে সাংবাদিকদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়। একটা সংবাদ তৈরি করতে হলে ছুটতে হয় একেবারে তৃণমূলে।

সাতকানিয়া সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি বলেন, অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় মফস্বল সাংবাদিকদের। দুর্নীতি, অনিয়মের সংবাদ তৈরি করতে হুমকি বা হামলা হয়। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন বা ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে সংবাদ হলেই অবস্থা কিছুটা অন্যরকম হয়। মফস্বল এলাকায় সাংবাদিকদের তেমন নিরাপত্তা দেওয়ারও কেউ থাকে না। অনেক সময় মামলা হয়। কিছু কিছু ব্যতিক্রম ঘটনাও ঘটে যেমন- পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আগে কোনো বিরোধ থাকলে তুচ্ছ কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাতকড়াও পরানো হয়। সাংবাদিকদের জন্য চরম লজ্জাজনক বিষয় এটা। সারাদিন ছুটতে হয় সংবাদের জন্য।

তিনি আরও বলেন, উপজেলা পরিষদ, পৌর পরিষদ, থানা, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটতে হয় মফস্বল সাংবাদিকদের। এভাবেই চলছে মফস্বল সাংবাদিকতা। তবে এভাবে চললে হবে না। সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য আইন পাস করা উচিত এবং আইনের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আইনের পাশাপাশি সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কেননা একতাই বল। একত্রে থাকলে শক্তি পাওয়া যায় এবং প্রতিপক্ষ ভীতচিত্ত অবস্থায় থাকে।

চট্টগ্রাম সংবাদের সম্পাদক ও প্রকাশক বলেন, দেশে দিন দিন সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতন বেড়েই চলেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাংবাদিকের ওপর হামলা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু এর কোনো বিচার লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় সাংবাদিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। সরকারের উচিত সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ নজর দেয়া এবং সাংবাদিক নেতাদের উচিত সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করা।

তিনি আরও বলেন, মফস্বল সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হন। আর এমনিতেই তো মফস্বল সাংবাদিকতা একটা চ্যালেঞ্জিং পেশা। এটা দেশের সব শ্রেণির জনগণই জানে। এক প্রকার যুদ্ধ করেই টিকে থাকতে হয় মফস্বল সাংবাদিকদের।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার নেতৃবৃন্দ, উপজেলায় কর্মরত গণমধ্যমকর্মী, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.