বাঁশখালীতে হেলমেটের আঘাতে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জায়গা-জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হেলমেটের আঘাতে মো. কায়সার নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার রাতে উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব রায়ছটা এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

কায়সার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লী‌গের সি‌নিয়র সহ-সভাপ‌তি ছিলেন। তিনি পূর্ব রায়ছটা আমান আলী সিকদার বাড়ীর মৃত ওমর আলীর ছেলে।

জানা গেছে, স্থানীয় ওমর আলীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলম নুরের দীর্ঘদিন ধরে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। শুক্রবার কায়সার চট্টগ্রাম শহর থেকে বাড়িতে আসলে রাত ৮টার দিকে পূর্ব রায়ছড়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জমির বিরোধ নিয়ে দুইপক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হেলমেট ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ওমর আলীর ছেলে মোহাম্মদ কায়সার সিকদারকে জখম করে। এ সময় তিনি ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে কায়সার সিকদারের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই মনজুর আলম বাদী হয়ে মামলা করছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একজনকে ছেড়ে দিয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন— মো. আকবর (৩৫), মেজবাহ উদ্দিন (১৯)।

ঘটনাস্থলে পরিবারের সদস্যরা জানান, কায়সার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে থাকেন। রেয়াজউদ্দিন বাজারে তার একটি দোকান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আলম নুর ও মৃত ওমর আলী পরিবারের সদস্যদের মাঝে জায়গা জমির বিরোধ চলে আসছিল। কিছুদিন পূর্বে স্থানীয় ফরিদ আলম ও আলম নুরের যোগসাজশে কায়সার সিকদারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে তিন মাস জেল খাটার অভিযোগ করেন। জেল থেকে বেরিয়ে কায়সার যখন গ্রামের বাড়িতে আসে তাকে একা পেয়ে আলম নুর ও ফরিদসহ ৪-৫ জন মিলে লাঠি এবং হেলমেট দিয়ে প্রচণ্ড আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলেও শনিবার দুপুর একটা পর্যন্ত সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্যকে দেখা যায়নি।

খানখানাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, কায়সার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন। নগরের রেয়াজউদ্দিন বাজারে মুরগীর ব্যবসা করতেন। শুক্রবারে ওয়ার্ড কার্যালয়ের অফিসের সামনে বসে আড্ডা করার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন এসে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হামলা করলে গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে চমকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আওয়ামী লীগ নেতা কায়সার শিকদারকে স্থানীয় জামাত নেতারা পিটিয়ে হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

বাঁশখালী থানার উপ-পরিদর্শক রাজীব চন্দ্র পোদ্দার বলেন, কায়সার শিকদার হত্যা মামলায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আনছার বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে বাঁশখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হত্যা মামলায় জড়িত দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.