চট্টগ্রামের ব্যাবসায়ীদের দোকান খোলার সিদ্বান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা দোকান খোলা রাখার দাবি জানিয়ে সম্মিলিত ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) থেকে ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খুলে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে যদি কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে সম্মিলিত ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ ও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। গত ১৮ এপ্রিল নগরীর টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে এক জরুরি সভায় ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।

২২ এপ্রিল আবারো লকডাউনে ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কোটি টাকার পুঁজি হারানো, দোকান ভাড়া, ব্যাংক লোন, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন খরচের পাহাড় তাদেও বহন করতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দোকান খুলে ব্যবসা করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। যদি কোনো কারণে ব্যবসায়ীরা  দোকান খুলতে না পারেন তাহলে আত্মাহুতি দেয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনোকিছুর বিনিময়ে দোকান খুলতে চান চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা।

সম্প্রতি টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নানের সঞ্চালনায় চট্টগ্রামের সম্মিলিত ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- তামাকুণ্ডি লেন বণিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবু তালেব, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ কবির দুলাল, বিপণিবিতান মার্কেটের সভাপতি মোহাম্মদ ছগির, টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি বেলায়েত হোসেন, তামাকুণ্ডি লেন বণিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার কামাল, রিয়াজউদ্দিন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম, গোলাম রসুল মার্কেট বণিক সমিতির সভাপতি রিন্টু বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আকবর, মতি টাওয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক, টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন চৌধুরী, মো. লিয়াকত আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর, তামাকুণ্ডি লেন বণিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. সেলিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকসহ ব্যবসায়ীরা নেতারা।

মার্কেট খুলে দেয়ার দাবিতে জেলা প্রশাসক ও সিটি মেয়রকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এ সময় জুবিলী রোড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল হালিম সেলিম, সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান, কামাল  হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, যুগ্ম-সম্পাদক ফরহাদুল ইসলাম রিন্টু, আরমান উর রসুল, মোহাম্মদ মোস্তফা, হুমায়ুন আহম্মেদ রাজু, আলী আকবর, জামাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুর রশিদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রামের সম্মিলিত ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ২২ এপ্রিল থেকে দোকান খোলা রাখার দাবি জানিয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে নগরীরর বিভিন্ন এলাকায় ২০-৩০টি ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। গত ১৯ এপ্রিল টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে দোকান খোলার দাবিতে জেলা প্রশাসককে স্বারকলিপি প্রদান করেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের বৃহত্তর কাপড়ের ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্র চট্টগ্রামের টেরীবাজার। টেরীবাজারে ২২০০ থেকে ২৫০০টি দোকান রয়েছে। প্রায় ২০ হাজার দোকানে কর্মচারী রয়েছে। লকডাউনের কারণে টেরীবাজারে দৈনিক ৭-৮ কোটি টাকার কাপড় ক্রয়-বিক্রয় থেকে বঞ্চিত। ব্যবসায়ীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারের কাছে চলতি মাসের ব্যাংক কিস্তি, ও চলতি বছরের ভ্যাট মওকুপের দাবি জানান টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা মো. ইসমাইল।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, লকডাউনে চট্টগ্রামের ব্যবসায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। পুরো বছর কাপড় ব্যবসায়ীরা ঈদ মৌসুমে ব্যবসা করে। লকডাউনের কারণে তা থেকে বঞ্চিত ব্যবসায়ীরা। জীবনের কারণে জীবিকা বন্ধ থাকবে সেটা হতে পারে না, জীবন আর জীবিকা দুটো একসাথে চলতে হবে- এটা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা দোকান খোলা রাখার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও সিটি মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা পেটের দায়ে শেষ পর্যন্ত রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.