‘আমেরিকাকে হস্তক্ষেপের সুযোগ সরকারই করে দিয়েছে’

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমেরিকার হস্তক্ষেপের সুযোগ আওয়ামী লীগ সরকারই করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহআলম।

শুক্রবার (০৭ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। নগরীর হাজারী লেইনে দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শাহআলম বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়েছে। দেশের রাজনীতি আজ মানুষের হাতে নেই, আওয়ামীলীগ বা বিএনপির হাতেও নেই। রাজনীতি এখন বিদেশি শক্তি, সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে চলে গেছে। সরকারের কিছু কর্মকাণ্ডে আমেরিকা স্যাংশন দিয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবে তাদের নাকি আমেরিকা ভিসা দেবে না। তাদের এই হস্তক্ষেপ করার সুযোগ মূলত আওয়ামী লীগ সরকারই করে দিয়েছে।’

‘আওয়ামী লীগের আমলে মানুষ ভীতির মধ্যে বসবাস করছে। সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে সাংবাদিকরা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। সেই আওয়ামী লীগ সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন বন্ধ করে দিল। রাতের আঁধারে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় টিকে আছে।’

আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে নীতিগত কোনো পার্থক্য নেই মন্তব্য করে শাহআলম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর অতিক্রম হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জণগণ যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল, দেশ আজ তার উল্টোপথ ধরে চলছে। সাম্রাজ্যবাদী, পুঁজিবাদী বাজারি ধারায় রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে। দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি বেড়েছে, নতুন করে আড়াই কোটি মানুষ বেকার হয়েছে। অন্যদিকে কোটিপতি বেড়েছে ১৫ শতাংশ।’

‘ধনী আরো ধনী হচ্ছে, গরিব আরো গরিব হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। খেটে-খাওয়া মানুষ, মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনে সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এই অবস্থায় প্রয়োজন একটি গণজাগরণের। এর মধ্য দিয়ে কৃষক-শ্রমিক-ক্ষেতমজুর, গরিব-মধ্যবিত্তদের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সিপিবিকে শক্তিশালী করে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে আনার সংগ্রামকে বেগবান করতে হবে।’

জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহার সভাপতিত্বে ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছফা ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সদস্য মৃণাল চৌধুরী, জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য উত্তম চৌধুরী, মছি উদ-দৌলা এবং প্রমোদ বড়ুয়া।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.