দিনভর পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি

লোহাগাড়া- সাতকানিয়া প্রতিনিধি 
 বুধবার সকালে জরুরি কাজে লোহাগাড়া  সাতকানিয়া থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য কেরানীহাট এলাকায় অবস্থান করছিলেন সাইফুল ইসলাম। তখন সকাল ৯টা। তবে বিস্ময়ের সঙ্গে সাইফুল দেখতে পান, দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটের পাশাপাশি কক্সবাজার ও বন্দরবান রুটে কোনো বাস চলাচল করছে না।
তিনি পরে জানতে পারেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের ২০ রুটে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো ধর্মঘট ডেকেছে।
‘কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এটা কী ধরনের ধর্মঘট? এই ধর্মঘট সম্পর্কে আমরা তো কিছুই জানি না’, বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাইফুল।
তিনি বলেন, ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমাকে বান্দরবানে যেতে হবে। কিন্তু এখানে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে আছি। সিএনজি করে যেতে হবে উপায় নেই। কিন্তু বাড়তি ভাড়া দাবি করছে।’
সড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ, মহাসড়কে থ্রি হুইলার ও হিউম্যন হলার চলাচল বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে বুধবার পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের ধর্মঘটের কারণে সাইফুলের মতো সাতকানিয়া থেকে দূরের বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা বিপাকে পড়েন।
 বুধবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা দক্ষিণ চট্টগ্রামের রুটসমূহে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দেওয়ায় সকাল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-বান্দরবান সড়কে কোনো বাস চলাচল করেনি। তাছাড়া অধিকাংশ যাত্রী ধর্মঘটের কথা না জানার কারণে রাস্তায় প্রচণ্ড রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে দুর্ভোগে পড়েন।
তবে পরিবহন নেতারা দাবি করছেন, তাদের সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট আকস্মিক কোনো কর্মসূচি নয়।
চট্টগ্রাম– দক্ষিণাঞ্চল– কক্সবাজার–বান্দরবান জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মুছা বলেন ‘আমরা একই দাবিতে গত ৯ অক্টোবর দুই ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করেছিলাম। ওই দিনের ধর্মঘট ছিল একটি প্রতীকী কর্মসূচি। ওই দিন আমরা বলেছিলাম, যদি ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন আমদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য আলাপ আলোচনার মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণ না করে, তবে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। তাই আমাদের এই কর্মসূচি।’
তাদের দাবিগুলো হলো- সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন, বিআরটিএর অনুমোদন ব্যতীত বাস চট্টগ্রাম– কক্সবাজার–টেকনাফ রোডে চলাচল নিষিদ্ধকরণ, সড়ক মহাসড়ক উপ সড়কের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির জন্য দায়ী ইজিবাইক, ব্যাটারি রিকশা, টমটম অবৈধ থ্রি হুইলার সিএনজি চলাচল নিষিদ্ধ করা, হাইওয়ের আইন মোতাবেক রাস্তার উভয় পার্শ্বের অবৈধ স্থাপনা হাট–বাজার সরিয়ে নেয়া, চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট আঞ্চলিক বাস টার্মিনাল সংস্কার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ, খোলা ট্রাকে লবণ পরিবহন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, রিকুইজিশান বাণিজ্য বন্ধ করা।
মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.