পটিয়া প্রতিনিধি:
পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা স্কুল এন্ড কলেজের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে অধ্যক্ষের পদটিশূন্য থাকলেও
চুক্তি ভিত্তিক অধ্যক্ষের পদটি
নেজামুল ইসলাম নামের একব্যক্তি দখল করে রেখেছেন। অথচ তাঁকে
চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ না দিতে ২০২৩ সালের ৮ আগষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় । শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনকে পাশকাটিয়ে অধ্যক্ষের পদটি দখল করে রেখেছেন নেজামুল ইসলাম। এ স্কুলে দীর্ঘদিন ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্য, ফরম পূরন ও প্রবেশ পত্র প্রদানের নামে অতিরিক্ত ফি আদায়। এছাড়াও স্কুলের নামে ভুমি খরিদ ঘটনায়ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন একাধিক অভিভাবক। অধ্যক্ষ ও পরিচালনা কমিটির অনিয়মকে সুকৌশলে বিশেষ সুবিধা নিয়ে এতদিন বৈধতা দিয়ে আসছেন উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসের কর্তা ব্যক্তিরাও। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে স্থানীয়রা দাবি জানিয়েছেন।
১৯৮১ সালে কুসুমপুরা ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত হয় কুসুমপুরা হাই স্কুল। যেটি পরবর্তীতে স্কুল এন্ড কলেজে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও কারিগরি (ভোকেশনাল) শাখা রয়েছে। কুসুমপুরা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২২০০ জন শিক্ষার্থী বর্তমানে পড়াশুনা করছেন। অনিয়ম-দুর্নীতির কারনে কুসুমপুরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে ।
ইতোমধ্যে বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে স্থানীয়
লোকজন অবহিত করেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, অধ্যক্ষ নেজামুল ইসলাম চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া)
আসনের সাবেক এমপি সামশুল হক চৌধুরীর এপিএস খ্যাত এম এজাজ চৌধুরীর ভগ্নিপতি। ক্ষমতার অপব্যবহার ও মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপুর্ন প্রজ্ঞাপনকে অমান্য করে নেজামুল ইসলামকে দিয়ে এতদিন ধরে কুসুমপুরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের পদটি সুকৌশলে দখল করে রাখা হয়। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্য কোনভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। স্কুলের সভাপতি মঈনউদ্দীন মাষ্টার মারা যাওয়ার পুর্বে বেশকিছু চেকে স্বাক্ষর নিয়ে রাখা হয়। মৃত্যুর পর এসব চেক ব্যবহার করা হয়েছে। যা তদন্ত করলে এসব অনিয়ম বেরিয়ে আসতে পারে। স্কুলের নামে যে জায়গা খরিদ করা হয়েছে তাতেও অনিয়ম হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: ইমরান জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে অধ্যক্ষ নেজামুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি রিট পিটিশন করেছেন। এজাজের ভগ্নিপতি স্বীকার করে তিনি বলেন,অনিয়ম, দূর্নীতির বিষয়ে একসময় আমরাও কমিটির বাইরে থেকে শুনেছি। কমিটিতে
দায়িত্ব নেওয়ার পর অনিয়মের বিষয়টি এখনো নজরে আসেনি। অতিরিক্ত টাকা
নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়ন
ও চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে
আমাদের বড় অংকের খরচ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে অনেক সময় অনেক ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুসুমপুরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নেজামুল
ইসলাম বলেন, প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে তিনি কমিটির সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেছেন।উচ্চ আদালতের নির্দেশে বর্তমানে প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত করেন। তবে
স্কুলে কোন ধরনের অনিয়ম, দূর্নীতির সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে জানান।