রাতে উত্ত্যক্তকারীদের হামলায় খুন বাবা, সকালে কান্নাভেজা চোখে পরীক্ষা হলে মেয়ে  

টিডিসি ডেস্ক  

রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তকারীদের হামলায় নিহত হয়েছেন আকরাম হোসেন (৪৫) নামের এক ব্যক্তি। গতকাল বুধবার রাতে নগরের তালাইমারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য আকরামের মরদেহ যখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে, তখন কান্নাভেজা চোখে এসএসসি পরীক্ষা দিতে যায় তাঁর মেয়ে আলফি আক্তার।

আজ ছিল ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। আলফি শহরের অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পরীক্ষা চলছে শিরোইল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে। আলফিকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করার জেরে খুন হন তার বাবা। তালাইমারি এলাকার বাসিন্দা আকরাম হোসেন পেশায় একজন বাসচালক ছিলেন।

আকরাম হোসেনের হত্যার ঘটনায় তার ছেলে ইমাম হাসান অনন্ত বাদী হয়ে সাতজনের নামে মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন, তালাইমারি বাবর আলী রোড এলাকার মো. নান্টু (২৮), মো. বিশাল (২৮), খোকন মিয়া (২৮), তাসিন হোসেন (২৫), মো. অমি (২৫), মো. নাহিদ (২৫) ও মো. শিশির (২০)। মামলায় আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

আকরাম হোসেনের স্ত্রী মুক্তি বেগম জানান, তাঁর মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করছিলেন বখাটে নান্টুসহ কয়েকজন। গতকাল বিকেলে বখাটেরা মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। পরে মেয়ে বাড়িতে ফিরে বিষয়টি জানালে তাঁরা নান্টুর পরিবারের কাছে অভিযোগ করেন। তখন নান্টুর পরিবার বিষয়টি তাঁকে জানায়, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নান্টু।

মুক্তি বেগম জানান, রাত ৮টার দিকে নান্টু কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর ছেলে অনন্তকে মারধর করেন। ছেলে মার খাচ্ছে দেখে এগিয়ে গেলে স্বামী আকরাম হোসেনকেও পিটিয়ে আহত করেন তাঁরা। একপর্যায়ে উত্ত্যক্তকারীরা আকরাম হোসেনের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন। পরে স্বামী ও ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক স্বামীকে মৃত ঘোষণা করেন।

মুক্তি বলেন, ‘মেয়ের এসএসসি পরীক্ষা চলছে। সারা রাত কেঁদেছে বাবার জন্য। সকালে পরীক্ষা দিতে চাইছিল না। পরে আত্মীয়স্বজনেরা অনেক বুঝিয়ে পাঠিয়েছে। পড়াশোনা ছাড়াই পরীক্ষা দিতে গেছে।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.