বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে নিউজ করায় সাংবাদিককে হুমকি

 

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ‘সেনাবাহিনীকে বিচার দেবে’ বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে সময়ের কণ্ঠস্বরের সাংবাদিক মো. জাহেদুল ইসলামকে।

 

 

উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের পূর্ব মাহালিয়া এলাকার ছাইল্যাতলী ছড়া থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর ০১৬০৫-৭৭৪৪৭১ নম্বর থেকে ফোন করে নিজেকে ‘কামাল’ পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি বলেন, “আমি এখন গিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে বিচার দিব আপনার নামে।”

 

সাংবাদিক মো. জাহেদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘আমি আমার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। অথচ এখন সেনাবাহিনীর নাম ভাঙিয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।’

স্থানীয় সুশীল সমাজ মনে করছেন, এই হুমকি ঘটনা প্রমাণ করে বালু সিন্ডিকেট কতটা শক্তিশালী এবং প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে তারা কীভাবে জোরপূর্বক ত্রাস সৃষ্টি করছে।

 

 

সাতকানিয়া সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, সংবাদ পরিবেশন করার কারণে সেনাবাহিনীর নাম ভাঙিয়ে সাংবাদিককে ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই ধরনের হুমকি আসলে সত্য চাপা দেওয়ার ষড়যন্ত্র।

 

 

সেনাবাহিনীর নাম ব্যবহার করে সাংবাদিককে হুমকির ঘটনা জানাজানি হলে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন ও সেনা ক্যাম্প।

সাতকানিয়া সেনা ক্যাম্পে দায়িত্বরত ক্যাপ্টেন পারভেজ বলেন, সেনাবাহিনীর নাম জড়িয়ে সাংবাদিককে হুমকি দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে কেউ পার পাবে না। আমরা বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

 

 

উল্লেখ্য, ছাইল্যাতলী ছড়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর প্রকাশের আগে উপজেলা প্রশাসনে বালু উত্তোলনের একটি আবেদন জমা পড়ে। আবেদনটি করেছিলেন স্থানীয় আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। ‘অসহায় গরিব মানুষ’ ও ‘জীবিকা নির্বাহ’ শব্দ ব্যবহার করে আবেদনটিকে সহানুভূতিপূর্ণ ও বৈধতার আড়ালে আনা হলেও তদন্তে জানা গেছে, এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার পেছনে রয়েছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী।

 

 

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ছড়ার পরিবেশ ও কৃষিজমির ক্ষতির চিত্র। যারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন, তারা নানা হুমকি-ধমকির শিকার হচ্ছেন।

 

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারিস্তা করিম জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, কিন্তু কাউকে পাইনি। ছড়া থেকে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.