সাতকানিয়া-ভূমি অফিসের চৌকাঠ পেরুলেই দেখা যায় সুফিয়ানসহ ৪জনের ঘুসের রাজত্ব

চরতীর তুলাতলী ইউনিয়ন ভূমি অফিস -

সৈয়দ আককাস উদদীন 
সাতকানিয়ার চরতী  ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী  মো:হারেজ ও এরশাদ রিয়াজ ও আবু সুুফিয়ানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা ঘুষ আদায় করছেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী হারেজের নেতৃত্বে আবু সুফিয়ান ও রিয়াজ এবং ভূমি উপসহকারী মো:এরশাদ।
বাংলাদেশ সরকার ভূমির নামজারির ফি ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করলেও তিনি সর্বনিম্ন ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছেন। আর অশিক্ষিত মানুষের কাগজপত্রে ত্রুটি না থাকলেও তারা তিনজনে মিলে ভুল বুঝিয়ে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করছেন বলে এমন অভিযোগ অনেকের।
হারেজ আহমদ চরতী তুলাতলী ইউনিয়ন  ভূমি অফিসে যোগদান করার পর  থেকেই আবু সুফিয়ান ও রিয়াজের মাধ্যমে শুধু জমির নামজারিতে প্রতিমাসে ঘুষ-বাণিজ্য করেছেন প্রায় ৩ লাখ টাকা।
 এখন তার মাসিক ঘুষ-বাণিজ্যের টাকার পরিমাণ প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা, এসব কিছু মূলত রিয়াজও  আবু সুফিয়ানের হাত ধরেই হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সামান্য ভুল থাকলেও জমির মালিকদের কাছ থেকে তিনি  নিজেই সুফিয়ানের মাধ্যমে  অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন। কেউ টাকা না দিলে তারা কোনো কাজই করেন না এবং কাগজপত্র তালাবদ্ধ করে রেখে দেন।
এবং ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণে আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে তিনি কয়েক গুণ টাকা নিয়ে থাকেন।
 এই ভূমি অফিসের চৌকাঠ পেরুলেই ভূমি কর্মকর্তা হারেজ আহমদের শিষ্য আবু সুফিয়ানের  নিজের করা আইন মানতে হয় সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে।
সরেজমিনে জানা গেছে, চরতী তুলাতলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারি, জমিভাগ, খাজনা আদায়, জমির পর্চা (খসড়া) তোলাসহ সব কাজে সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে অনৈতিকভাবে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন এই হারেজ আহমদের নেতৃত্বে এই তিনজনে।
চুক্তির টাকা ছাড়া কোনো ফাইলই নড়ে না। তাদের  দুর্নীতির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ভূমি মালিকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, তিনি সরাসরি জমির নামজারি করতে গিয়ে তিনি বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন।
সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও তাকে অনেক আগের মালিকদের ওয়ারিশ সনদ এনে দিতে বলা হয়, যার কারণে আর নামজারি করা হয়নি। দালাল ছাড়া গেলে সবার সঙ্গে এমনই করা হয়।
জানা যায়, চরতী তুলাতলী ভূমি অফিসে অস্থায়ী চুক্তি ভিত্তিতে চাকুরী করেন আবু সুফিয়ান এবং আবু সুফিয়ানের বাড়ি ভূমি অফিস সংলগ্ন একই গ্রামে।
বর্তমানের তিনি সাতকানিয়ার চরতী  এলাকা বসবাস করেন।
 সচেতন মহল এই আবু সুফিয়ানের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুলাতলী এলাকার  বাসিন্দা জানান,অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকুরী করলেও অল্প দিনে সুফিয়ান আর রিয়াজ বর্তমানে কোটি টাকার মালিক।
আবু সুফিয়ান ইতিমধ্যে নিজ গ্রামে পাকা দালানের কাজও শুরু করেছেন।
অর্পিত সম্পত্তির নামজারী ও খাজনা দাখিলায় লাখ লাখ টাকা নিরীহ মানুষ থেকে আদায় করেছেন বলেও অভিযোগ আছে সুফিয়ানসহ এই ইউনিয়ন ভূৃমি অফিসের অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
এদিকে তুলাতলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারীর কর্মকর্তা হারেজ আহমদ বলেন-আমি আসছি অফিসে এক বছর হচ্ছে প্রায় তবে আমি এসব দূর্নীতিতে নেই।
লোকজন অতিরিক্ত চাহিদা মোতাবেক টাকা দিলে তো সেটা তাদের দোস।আমি অফিসে বড় বড় পোষ্টার লাগায়চি
এদিকে কাঞ্চনা ইউনিয়নের দাখিলার গরমিলের বিষয়ে জানেননা বলেও জানান একই অফিসের উপসহকারী কর্মকর্তা এরশাদ।
এখানে অভিযুক্ত আরেক কর্মচারী রিয়াজকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী আবু সুফিয়ান বলেন, আমি এসবে কিছুতেই জড়িত নেই তবে পাকা দালান নির্মাণ করতেছি সেটা সঠিক।
তখন আপনি কি কাজ করেম বলে প্রতিবেদক পাল্টা প্রশ্ন করলে তিনি চুপ থাকেন।
চরতীর তুলাতলি ভূমি অফিস দ্বারা হয়রানির শিকার একাধিক বাসিন্দা জানান,জমি বিক্রি করে মেয়ে বিয়ে দিতে হবে এটা যদি কোনরকম আবু সুফিয়ানের কানে যায় সেটা সরাসরি হারেজ আহমদের বাহানা দিয়ে আটকিয়ে মোটা মাল নেয়।
আর আমরাও ওই মুহুর্তে দিতে বাধ্য, কারণ মেয়ের বিয়ে কিংবা চিকিৎসার মত কাজ তো আর না করে পারিনা।
পর্ব-০১
মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.