বৈদ্যুতিক মিটার ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ চলছে ১৮মাস ধরে, মূল হোতা রিডার হারুন

সাতকানিয়া কেরানী হাটে নেই মিটার কিন্তু আছে বিদ্যুৎ সংযোগ

 

 

সৈয়দ আককাস উদদীন 

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পিডিবি( বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের) আবাসিক প্রকৌশলী সৌভন ভৌমিক থেকে শুরু করে সাতকানিয়ার  প্রিপেইড মিটার প্রকল্পের  ইনচার্জ রঞ্জু আহমেদের বিরুদ্ধে অহরহ দূর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকা  সাপ্তাহিক চট্টগ্রাম সংবাদ’র অনলাইনে এবং জাতীয় দৈনিক সকালের সময় পত্রিকায় একাধিক দূর্নীতির খবর প্রকাশের পর-  সংশ্লিষ্ট দফতরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই অফিসটির অভিযোগ খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেন।

 

তবে এর ভেতর সাতকানিয়া  কেরানী হাটে অবস্থিত বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে বসে থাকা হকারদের কোন ধরনের মিটার ছাড়াই দীর্ঘ দেড় বছর ধরে অবৈধ সংযোগ দিয়ে ব্যবহৃত মিটারের রিডিং ছাড়াই অন্তত ৩০টি দোকানে সংযোগ প্রদান করেন।

 

এবং হকারদের পশ্চিম পাশে কাজী অফিস সংলগ্ন মার্কেটে হকার ছাড়াও বিভিন্ন অফিস ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং পাকা দোকানে ব্যবহৃত ১৮মাস ধরে একটি মিটারের মাসিক কার্যক্রম দেখা বন্ধ হলেও বন্ধ হয়নি ওই মার্কেট এবং হকারদের দেওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ।

 

এখন জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে, যে মিটারের রিডিং ১৮মাস ধরেই বন্ধ রয়েছে, তাহলে সেই মিটারের অধীনে অন্তত ছোট বড় ৫০টি দোকান ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যে বিদ্যুৎ খরচ হয় তার হিসাব কিভাবে করে সাতকানিয়া পিডিবি বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র?

এবং সরকারি বেতনভোগী মিটার রিডার হারুনুর রশীদ তাহলে প্রতিমাসে বন্ধ মিটারের রিডিং দেখেন কিভাবে?

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৮মাস ধরে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ হিসাব ছাড়াই  কেরানীহাটে দায়িত্বরত রিডার হারুনুর রশীদ আনুমানিক হিসাব করে প্রতিমাসে গড়পড়তা মাত্র ১৫শত ইউনিট হিসাব করেন মাত্র।  প্রকৃত পক্ষে হকারসহ ৫০টি দোকানে ইউনিট আসবে অন্তত ৮হাজারের কাছাকাছি।

 

শুধু তাই নয় অনুসন্ধানে আরো  ওঠে এসেছে, মূলত ওসব প্রতিষ্ঠানে দরকার থ্রীফেজ একটি মিটার, ওটা না লাগিয়ে পূর্বের সচল থাকা মিটারটাকেই অসাধু চক্রের সাথে মিলে স্বয়ং মিটার রিডার হারুনুর রশীদ বন্ধ করে দিয়ে- কম খরচ হোক কিংবা বেশ খরচ হোক প্রতিমাসে গড়পড়তা ১৫০০ ইউনিটের বিল করেন বলে নিজেই স্বীকার করেছেন সাতকানিয়া পিডিবির মিটার রিডার হারুনুর রশীদ।

 

এই বিষয়ে সাতকানিয়া পিডিবির মিটার রিডার অভিযুক্ত  দূর্নীতির বরপুত্র হারুনুর রশীদকে কল করা হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন,ভাই ১৮মাস না সর্বোচ্চ এক বছর ধরেই হবে ব্যাপারটা। আসলেই ওই মিটারটি বন্ধ, তবে ওই মিটার থেকেই যে অন্তত ৫০টি দোকানে সংযোগ দেয়া হয় সেটা আমি জানতাম না।

 

তিনি বিষয়টা অকপটে স্বীকার করে প্রতিবেদককে আরো বলেন,আসলে আমরা এক বছর ধরে মিটারের রিডার দেখে বিল করিনি কখনোই।

যেহেতু মিটারটি বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে, তবে কম হোক কিংবা তারা ৬হাজার ইউনিট খরচ করলেও আমরা আন্দাজের উপর ভিত্তি করে   ১৫০০ ইউনিট করে প্রতিমাসে  বিল করেছি ঘটনা সত্য- যা প্রকৃত পক্ষে অন্যায়,তবে এটাও সত্য যে  ওখানে দরকার একটি থ্রীফেজ মিটার।

আমরা দ্রুত কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে তাদেরকে সচল একটি কার্ড মিটার দিবো, এবং এটা লেখালেখি হওয়াতে আজকেই আমরা নোটিশ দিবো তারা অন্য আরেকটা মিটার নেয়ার জন্য।

 

আগের ১৮মাসের ব্যবহৃত প্রকৃত রিডিং   বিলের কি অবস্থা হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি আবাসিক প্রকৌশলী সৌভন ভৌমিকের সাথে আলাপ করতে বলেন।

 

এবং এরকম ভুল আর হবেনা বলেও তিনি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।

 

এদিকে জানা গেছে, আবাসিক প্রকৌশলী সৌভন ভৌমিক এই হারুনুর রশীদকে কাজে লাগিয়ে সাতকানিয়ার অন্তত শতাধিক জায়গায় এরকম সচল মিটার বন্ধ করে দিয়ে আনুমানিক গড়পড়তা হিসেবে বিল করেন বলে বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

 

এদিকে সারা সাতকানিয়ায় বিশেষ বিশেষ জায়গায় আবাসিক প্রকৌশলীর হয়ে এই হারুনুর রশীদ খুব সুক্ষভাবে এই কাজ করেন বলে সাতকানিয়া পিডিবি (বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র) এর অফিস সূত্রে জানা গেছে।

হারুনুর রশীদের হাত ধরে দীর্ঘ ১৮মাস ধরে কেরানী হাটের মতো এলাকায় প্রকাশ্যে দিবালোকে এমন দূর্নীতির বিষয়ে জানার জন্য আবাসিক প্রকৌশলী সৌভন ভৌমিককে কল করা হলে তিনি কল ধরেননি।

কল না ধরার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিস সংশ্লিষ্ট একজন বলেন হারুনুর রশীদ একা দূর্নীতি করে পার পাবেনা তাই নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি ভাগ প্রকৌশলী সাহেবকে দেয় তাই তিনি কল ধরবেননা।

 

চলমান পর্ব-০১

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.