সদর রেঞ্জ:সাইফুল ইসলামের দূর্নীতির ডান হাত থানচির রেঞ্জার ইসরায়েল, দেদারসে চলছে কাঠ পাচার

বান্দরবান সদরের ডেপুটি রেঞ্জার ও থানচি রেঞ্জারের আমলনামা-

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম 

বান্দরবান বন বিভাগের স্পেশাল টিমের ওসি কাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম সাংগু রিজার্ভের কাঠ দিয়ে থানচিতে অবৈধভাবে ইটভাটায় জ্বালানী সরবরাহের লাইসেন্স দিয়েছেন।

 

সিজনে ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে রফাদফা হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি ইটভাটা মালিক ও আওয়ামীলীগ নেতা সুজনকে আশ্বস্থ করেছেন তিনি যতদিন আছেন ততদিন ডিএফওকে ম্যানেজ করবেন। এনিয়ে বান্দরবান বন বিভাগে কানাঘুষা চলছে। তারমত দূর্নিতূগ্রস্থ ও চাঁদাবাজ বন কর্মকর্তার কারণে পরিবেশের জীববৈচিত্র ধ্বংসের ধারপ্রান্তে বান্দরবানে।

বান্দরবানের সুশীল সমাজ এ নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় আছে।

অপর দিকে বান্দরবান বন বিভাগের সদর রেঞ্জে দায়িত্ব পেয়েই সাঙ্গু রিজার্ভ উজাড়ের নতুন মিশনে নেমেছেন ডেপুটি রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

 

অভিযোগ অনুযায়ী, দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি থানচি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ ইসরাইল হোসেনের সঙ্গে গোপন সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। সেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই থানচি রেঞ্জে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ‘ জোত পারমিট’ অবৈধভাবে পুনরায় চালু করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, থানচি রেঞ্জ এলাকা থেকে সাঙ্গু রিজার্ভের সংরক্ষিত গাছ নির্বিচারে কেটে প্রথমে পাঠানো হচ্ছে বান্দরবান সদর ডিপোতে। সেখানে সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম কাগুজে বৈধতার ছদ্মবেশে টিপি ইস্যু করে সেই কাঠ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছেন এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

 

এদিকে নির্বাচনী তফসীল ঘোষণার ঠিক আগের দিনেই বান্দরবান বন বিভাগে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন দুর্নীতিগ্রস্ত ও চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত কাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী মহলকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে তিনি বান্দরবান সদর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বাগিয়ে নিয়েছেন। এই পদায়নকে কেন্দ্র করে বন বিভাগজুড়ে তীব্র অসন্তোষ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

বন বিভাগের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সদর রেঞ্জে রেঞ্জ কর্মকর্তার পদে ডেপুটি রেঞ্জার মোঃ রাশেদুজ্জামানের দায়িত্ব পাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে প্রশাসনিক নীতিমালা উপেক্ষা করে কাজী মোঃ সাইফুল ইসলামকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সিসিএফ, সিএফ ও ডিএফও পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার একটি ‘প্যাকেজ ডিল’ সম্পন্ন করেই তিনি এই চেয়ার নিশ্চিত করেন। একই সঙ্গে তাকে স্পেশাল টিমের ওসি এবং বালাঘাটা এসএফএনটিসির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়, যা বন বিভাগের প্রচলিত প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা।

গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই দুই মাসের মধ্যে ওই প্যাকেজের পুরো টাকা তুলে নেওয়ার লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে সক্রিয় হন কাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম—এমন অভিযোগ উঠেছে। এ লক্ষ্যে সদর রেঞ্জ ও স্পেশাল টিমের পরিচিত দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা এইচ.এম জলিলুর রহমান, মোঃ সোহেল হোসেন, জয়ন্ত কুমার রায়, মোঃ আবুল হোসেন এবং কয়েকজন ফরেস্ট গার্ডকে নিয়ে একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এই কর্মকর্তারা আগে থেকেই বান্দরবান সদর রেঞ্জাধীন শহর ও সুয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যকুল, কাইচতলী, কদুখোলা, হলুদিয়া ও গোয়ালিয়াখোলা এলাকা থেকে অবৈধ কাঠ পাচারের মাসিক লাইন পরিচালনা করে আসছিলেন। নতুন রেঞ্জ কর্মকর্তা দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই অবৈধ নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী ও সংগঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন থেকেই কাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ী ও পাচারকারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ শুরু করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি দিনে-রাতে সেগুন কাঠের দরজার পাল্লা, চৌকাঠ, চিরাই কাঠসহ পাড়াবন, প্রাকৃতিক বন ও সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কাঠ পাচারের জন্য অলিখিত ‘লাইন’ ও অনুমতি দিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে সংরক্ষিত পাহাড়ি বনাঞ্চল ক্রমেই উজাড়ের মুখে পড়ছে।

বন বিভাগের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, কাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম আগামী দুই বছরের মধ্যেই অবসরে যাওয়ার কথা। ফলে অবসর-পূর্ব সময়ে বান্দরবানের মতো নৈসর্গিক ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলকে কেন্দ্র করে তিনি দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির শেষ ছোবল দিতে এসেছেন—এমন মন্তব্য করছেন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

তার এই পদায়নকে ঘিরে বন বিভাগের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অভিযোগ রয়েছে, সিনিয়র ও যোগ্য সহযোগী রেঞ্জ কর্মকর্তাদের উপেক্ষা করে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা বন বিভাগের প্রচলিত নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাঠামোর সরাসরি লঙ্ঘন।
এ অবস্থায় বন বিভাগের সচেতন মহল প্রশ্ন তুলছে একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিতর্কিত একজন কর্মকর্তা কীভাবে আবারও সংরক্ষিত পাহাড়ি বনাঞ্চলের মতো স্পর্শকাতর দায়িত্ব পেলেন, কার স্বার্থে এবং কোন প্রক্রিয়ায় এই পদায়ন কার্যকর হলো, আর প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহল বিষয়টি জানেও না, নাকি জেনেশুনেই নীরব রয়েছে?
এই বিষয়ে বক্তব্য নিতে সাইফুল ইসলামকে কল করা হলে তিনি জানান এই বিষয়ে আমার কিছু জানার নেই আজি আসছি মাত্র ১০/১২দিন হয়েছে।

আমি মোজা পরে জুতো পরার সময় পাচ্ছিনা,এর ভেতর আমি কেমনে থানচিতে ইটভাটার জ্বালানির লাইসেন্স দিবো।

অপরদিকে দূর্নীতির সদর রেঞ্জের অন্যতম সহযোগী থানচির রেঞ্জার ইসরায়েল বলেন,আমার এখানে কোন জোত পারমিট চালু করা হয়নি এবং সদর রেঞ্জের কাজী সাইফুল ইসলামের বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবনা, আমি ওনার সাথে কোন মিটিং করিনি।

এবং জনৈক আওয়ামী লীগ নেতা সুজনের ইটভাটা জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করার অনুমোদন দিইনি।

তবে ওই ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কি ব্যবহার করা হচ্ছে বল্লে তিনি অবশ্যই চুপ থাকেন।
অভিযোগ রয়েছে এই ইসরায়েল থানচি রেঞ্জ এর দায়িত্বকে পুঁজি করে প্রতিদিন অহরহ টাকা কামাচ্ছে।

 

পর্ব-০১

 

 

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.