স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বঙ্গবন্ধুর থেকে ক্ষমা চেয়েছেন ৪র্থ শ্রেনির একজন সাধারণ সরকারি কর্মচারী। একই সাথে ক্ষমা চেয়েছেন দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রীর কাছেও। আজ কোপা আমেরিকার ফুটবল ফাইনাল খেলা শেষ। যেখানে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ যুবক-যুবতী , বৃদ্ধ, মহিলা, সকলেই আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিল সাপোর্ট নিয়ে মাতাল। তখনই বের হলো দেশের এক কোণে পড়ে থাকা দোহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত ৩২ বছর বয়সী মোজাফ্ফর আহমেদ নামের এই যুবক। যার বয়সী যুবকরা আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল সাপোর্ট নিয়ে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় সে বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যার কাছে স্বাধীন দেশের এই অবস্থার জন্য ক্ষমা চাইলেন।আবেগঘন দুঃখ প্রকাশ করলেন তার ফেইসবুকে। এমন দেশপ্রেম খুজেঁ পাওয়া মুশকিল। সকলকে যেখানে আর্জেন্টিনার ছবি পোস্ট করে ষ্টার্টাস দিচ্ছে ফেইসবুকে ঠিক একই সময়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দিলেন এই যুবক।
তার ফেইসবুক থেকে হুবহু তুলে ধরলাম।
বঙ্গবন্ধু ক্ষমা করো আমায়। তোমার স্বপ্নের দেশে আজও উড়ে ভিনদেশী পতাকা।
ক্ষমা করো দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা (প্রধানমন্ত্রী)
স্বাধীনতার তুমি কার?? বাংলাদেশ তোকেই ভালোবাসি।
আজ বাংলাদেশে দুঃখজনক ঘঠনা ঘঠেছে।
নিজের খেয়ে নিজের পরে, গান গায় তাদের, যাদের দেশের মানুষ এখনো বাংলাদেশ চিনেন ই না।
আমরা এমন এক জাতী যেখানে নিজেদের অবস্থান গড়ে নিয়ে না পারার ব্যর্থতা কখনোই মাথায় আনি না। বরং সময়, অর্থ ব্যায় করে উল্লাস করি, একই সাথে মারামারি, এমনকি আত্বহত্যা পর্যন্ত ঘঠেছে এই বাংলাদেশে শুধু মাত্র আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল সাপোর্ট নিয়ে।
এমন ঘঠনাও আছে যেখানে নিজের ভিটেমাটি বিক্রয় করে নিজের দেশে পতাকা না উড়িয়ে ভিন দেশের পতাকা উড়ায়।
আমাদের মহান দিন গুলোতে প্রমাণিত দোকান, গাড়ি, বা সরকারি, বেসরকারি অফিসে ছোট্ট একটি পতাকা তুলতে কতোই না কষ্ট। ছেড়াফাটা, রং জ্বলে, পুরোনো এক পতাকা দিয়েই চলছে বছরের পর বছর। আমরা গোলামী করতে পছন্দ করি। জমিদারি নয়।
খেলাধুলা করা ভালো,দেখা,সাপোর্ট করা অবশ্যই ভালো। কিন্তু তাই বলে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। কারণ কোন ভিনদেশী আমাদের দলকে সাপোর্ট করতে দেখা যায় নাই। আমাদের ফুটবল টিম হয়তো ইন্টারন্যাশনাল লিগ খেলতে না পারলেও ক্রিকেট টিম কিন্তু ঠিকই খেলে। কই কোন দেশে আমাদের দেশের পতাকা উত্তলন করে আঙ্গুল দিয়ে দেখান।
আমাদের দেশে যা হয় পৃথিবীর আর কোথাও হয় না, যেখানে পরনের লুঙ্গী খুলে মাথায় পেঁচিয়ে নিজেকে সন্মানিত মনে করি। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে লাভ কি? যদি স্বাধীনতা শব্দের অর্থই না বুঝি? তার চেয়ে উত্তম মূর্খ থাকা। মূর্খ হয়ে যেহেতু স্বাধীনতা শব্দের অর্থ বুঝলাম, অনুভূতি হলো এটা আমার প্রিয় দেশ, যেখানে শিক্ষিত মানুষ গুলো ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা বলে চিৎকার দিয়ে উঠে সেখানে আমি মূর্খ না হয় বাংলাদেশ বলে চিৎকার দিবো। স্বাধীন দেশের আকাশে অন্যের পতাকা উড়ে আসলেই দুঃখ জনক।
আসুন নিজ দেশের সাপোর্ট করি, দেশকে ভালো বাসি। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।