বিপ্লব বড়ুয়া সেজে প্রতারণা করে কক্সবাজারের যুবক গ্রেপ্তার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক দাবি করে সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতিশ্রুতি দিতেন চাহিদামতো বদলির। একই পরিচয় দিয়ে নিয়োগ দেওয়ার নামে টাকা নিতেন অনেকের কাছ থেকে। এমনকি আইনজীবীদের কাছ থেকেও নিতেন টাকা। এমনকি এই লোক প্রতারণার জালে ফেলেছেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রীকেও।

কথিত সেই ‘এপিএস’ শেষমেশ ধরা পড়লেন পুলিশের হাতে। নাম তার গিয়াস উদ্দিন কবির (৩৯)। রোববার (১১ জুলাই) ভোরে কুমিল্লা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন।

গ্রেপ্তার গিয়াস উদ্দিন মাস্টার্স পাস। তিনি একটি ব্যাটারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তার বাড়ি কক্সবাজারে।

পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে একটি প্রতারকচক্র হোয়াটসঅ্যাপ ও বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে টাকা দাবি করে আসছিল। শুধু বিপ্লব বড়ুয়াই নন, এই প্রতারকচক্রটি নাম ব্যবহার করছিল পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রীরও।

সম্প্রতি এই একই চক্র কুমিল্লার অ্যাডভোকেট কামাল হোসেনের কাছ থেকে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পরিচয় দিয়ে দেড় লাখ টাকা নেয়। অ্যাডভোকেট কামাল প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।

এরপরই ঘটনার তদন্তে নেমে সাইবার পুলিশ জানতে পারে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকরি ও বদলির নামে টাকা নিচ্ছেন গিয়াস উদ্দিন কবির নামে এক লোক।

পুলিশ জানতে পারে, সরকারি কর্মকর্তাদের কেউ কেউ এসব ফোন পেয়ে টাকা দিতে অস্বীকার করলে গিয়াস তাদের ভয়ও দেখাতেন। সামাজিকভাবে মানসম্মান ক্ষুণ্ন করবেন বলে হুমকি দিতেন। ফলে মানসম্মান বাঁচানোর ভয়ে টাকা দিয়ে দিতেন অনেকে।

পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের সিনিয়র সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার (এসি) ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ বলেন, গ্রেপ্তার গিয়াস উদ্দিন কবির মন্ত্রী-এমপির কাছ থেকে সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। এমনকি তিনি ক্ষমতাশীন দলের প্রবীণ নেতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আদায় করতেন। বিষয়টি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানার পরে মামলা করেন। সেই মামলায় কুমিল্লা থেকে গিয়াস উদ্দিন কবিরকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।’

রোববার (১১ জুলাই) প্রতারক গিয়াস উদ্দিন কবিরকে আদালতে পাঠিয়ে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.