সাতকানিয়ায় সততা ফাউন্ডেশনের আউট অব স্কুল সিলড্রেন এডুকেশন প্রকল্পে শিক্ষক নিয়োগে লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ!
সৈয়দ আক্কাস উদ্দীন:
সততা ফাউন্ডেশনের নাম দিয়ে শিক্ষা প্রকল্প হাতে নিয়ে সাতকানিয়ার জনপদের শিক্ষিত তরুণ-তরুণী সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়ার মিশনে নেমেছে সততা ফাউন্ডেশন নামের এই এনজিও।
সততা উন্নয়ন সংস্থার সহযোগীতায় আউট অব স্কুল সিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম বিষয়ক প্রোগ্রামে সাতকানিয়ার বিএ পাশ শিক্ষিত তরুনদের আহবান করে এই এনজিও সংস্থা।
আহবানে বলা হয়, নিয়োগ দেয়া হবে সাতজন প্রার্থী এবং প্রার্থী ছিলোও সাতজন।
গত ১৪ই জানুয়ারী সততা ফাউন্ডেশন নামক এনজিওর সাতকানিয়ার কেরানীহাটের ঢেমশা রোডের একটি ভাড়া বাসায় প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেয়া হয়।
কিন্তু প্রার্থীদের ইন্টারভিউতে বলা হয় বিএ পাশ যোগ্যতা , বেতন ১২০০০ টাকা, এবং মোটর সাইকেল নিজস্ব থাকা চাই এবং যাদের আছে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
অনুসন্ধানে জানাযায়,ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত ৭জনের মধ্যে উপস্থিত ৫জনই মাষ্টার্স পাশ,তাদেরকে সরকারি দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কী না এমন একটি প্রশ্ন করা হয়।এবং আরেকটি প্রশ্ন ছিলো বাড়ি কোথায় কোন ইউনিয়ন, ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্নগুলি ছিলো অনেকটা এমনই।
ইন্টারভিউ বোর্ডের পরীক্ষক ছিলেন সাতক্ষীরার বাসিন্দা সততা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোঃরাকিব ও তার অফিস সহকারি সুমন।
ইন্টারভিউ নেয়ার পরে সুকৌশলে বিভিন্ন অজুহাতে প্রার্থীদের কেরানীহাটস্থ হক টাওয়ারের সামনে ডেকে ডেকে কৌশলে নিয়োগের বিষয়ে আর্থিক লেনদেনের প্রস্তাব দেন সততা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রাকিবের পক্ষে তার সহকারি সুমন।
এদিকে ইন্টারভিউ দেয়া চাকুরীতে ইচ্ছুক সাতকানিয়ার যোগ্য কিছু শিক্ষিত তরুনরাও সুকৌশলে যাবতীয় যোগ্যতার কথা বলে টাকার প্রস্তাবের কথা উড়িয়ে দেন।
তখনি সততা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রাকিবের মিশন সফলতা লাভ না করলে, সততা ফাউন্ডেশন তাদের পূর্বের নিয়োগের নীতিমালা বহির্ভূত ভাবে বিভিন্ন দফায় আর্থিক সুবিধা নিয়ে, ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত যোগ্য প্রার্থীদেরকে বাদ দিয়ে গোপনে নতুন প্রার্থীদের থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে সাতক্ষীরার বাসিন্দা সততা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রাকিবের বিরুদ্ধে।
কথা হয় সাব্বির(ছদ্মনাম) ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত এক যুবকের সঙ্গে তিনি বলেন,আমি ইন্টারভিউ বোর্ডে পরীক্ষায় দেয়ার পরে এনজিও এর কর্তা সুমন সাহেব আমাকে কল করে কেরানীহাট হক টাওয়ারের সামনে ডাকেন, তখন বলেন ভাই কেমন আছেন আপনার নিয়োগের বিষয়ে কনফার্ম করেছেন আমাদের রাকিব স্যার, আপনার ডিউটি মাত্র ৩ ঘন্টা আপনি চাইলে চাকুরীর পাশাপাশি অন্য কাজ ও করতে পারেন, সুতরাং এমন সুখের চাকুরী পেতে হলে মাত্র ৩০ হাজার টাকা লাগবে,দীর্ঘ ৫টি বছর আপনি অল্প সময় ব্যয় করে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন সমস্যা নেই এমন প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।
অতএব আমি সবকিছুর দিকে কনফার্ম হলেও টাকা দিতে অপারগতা করলে গতকাল ২৪শে ফেব্রুয়ারী সাতকানিয়া উপজেলায় এনজির শিক্ষা প্রকল্প নিয়ে একটি মিটিং হলে ওখানে আমাকে আর ডাকেনি।
এদিকে অযোগ্যদের নিয়োগ, যোগ্যদের বাতিল,আর নিয়োগের বিধি বহির্ভূত আচরণ, শিক্ষিত তরুন আহবান করে কৌশলে টাকার অফার দেয়া,আর কম যোগ্যদের থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পাদন, ইন্টারভিউ বোর্ডে রাজনৈতিক মতাদর্শ জানতে চাওয়ার রহস্য কী?আর ফ্যামেলি বাসাকে অফিস বানিয়ে চাকুরী প্রত্যাশী পরিচয়ে দিনে আর রাতে বিভিন্ন বয়সী নারীর আনাগোনার বিষয়ে সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে, দেখা মেলে সামনে একটি টেবিল আর ২টি চেয়ার আর ভেতরে আরেকটি রুমে বেডরুম ও কিচেন রুম।
প্যান্ট পরতে পরতে ভেতরের রুম থেকে সামনের রুমে আসতে দেখা যায় রাকিব সাহেবকে, তিনিই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক।
সততা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোঃরাকিব বলেন, আমরা নিয়োগে কোন রকম দূর্নীতি করিনি,তবে যোগ্যদের বাদ কেন দেয়া হলো?
যেখানে আপনি ইন্টারভিউ বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন তবে আপনার চেয়েও লেখাপড়ায় যোগ্য ব্যক্তি আপনার প্রতিষ্ঠানের অধীনে ৩ঘন্টা চাকুরী করার জন্য আসছিলো এবং যেখানে আপনার নিয়োগের সকল বিধি অনুসরণ করা হয়েছিলো তবুও কেন তাদেরকে বাদ দিয়ে আপনার নিয়োগের ইস্তেহারকে ভূলন্ঠিত করা হলো? এখানে কী অনিয়ম বা দূর্নীতি হয়নি?
এমন প্রশ্নের জবাবে চুপ হয়ে তিনি বলেন,আপনি একটা লিখিত অভিযোগ দেন তখন আপনাকে লিখিত ভাবে জানানো হবে।
তবে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের একাডেমিক বিষয়ে বলা যাবেনা।
এদিকে প্রতি উত্তরে বলা হয় অভিযুক্ত ব্যক্তিতো আপনি নিজেই, সুতরাং আপনাকে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে এটার রেজাল্ট কী আসবে!তখন তিনি(রাকিব সাহেব)চুপ হলেও তার সহকারি সুমন বলেন এখানে যোগ্য অযোগ্য বিষয় না, বিষয়টা হলো আমি আর আমার বস রাকিব যেটা ভালো মনে করি সেটা, সকল এনজিওতে এরকম একটু আধটু অনিয়ম হয়ে থাকে তবে আমাদেরটাতে এতবেশী হয়নি।
তবে রাতে দিনে বিভিন্ন বয়সী নারীদের আনাগোনা ও চোখে পড়ে এই অফিসে এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, এখানে না আমার অফিসে নারীদের কোন কাজ নেই,এই বিল্ডিংটা ফ্যামেলী বাসার বিল্ডিং তাই বিভিন্ন তলায় উঠানামা করেন নারী পুরুষরা।
তবে বিল্ডিং এর সামনের একাধিক স্থানীয়রা জানান, অফিসটি নিচের তলায় হওয়ায় উপরের তলায় ভাড়া বাসা হওয়ায় রাকিব সাহেবরা নারীর আনাগোনাকে ঐ ইস্যু দেখিয়ে পার পেয়ে যায়।
তারা আরো জানান,স্থানীয় প্রশাসন যদি তাদের এনজিও এর অধীনে শিক্ষা কর্মকান্ডকে নজরে রাখেন বিভিন্ন অনিয়ম আর অফিস কার্যক্রমের পাশাপাশি যে তারা বিভিন্ন বয়সের নারী নিয়েও রাত্রি যাপন করেন তার প্রমাণ পাওয়া যাবে।
এদিকে সততা ফাউন্ডেশনে কার্যক্রমের আড়ালে বিভিন্ন বয়সী নারীর আনাগোনার অভিযোগের বিষয়ে বাড়ির মালিককে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।