আনোয়ারায় নকল চিপসের কারখানা বন্ধ করলেন ইউএনও

 

আনোয়ারা প্রতিনিধি

নোংরা পরিবেশে আটা-ময়দা ও রঙের সঙ্গে কেমিক্যাল মিশিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি করা হচ্ছিল শিশুদের লোভনীয় পণ্য চিপস যার পুরোটাই নকল। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় উপজেলার বরুমছড়া এলাকার গনি সওদাগর ফুড এন্ড বেভারেজ নামে অনুমোদনহীন এ কারখানাকে বিএসটিআই এর সহযোগিতায় ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শেখ জোবায়ের আহমেদ।

ঘিঞ্জি ঘরে বানানো এসব নকল চিপস ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। এ ধরনের চিপস খেয়ে শিশুদের অনেক বড় ক্ষতিও হতে পারে এমন অভিমত শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শেখ জোবায়ের আহমেদ অভিযান চালিয়ে ফ্যাক্টরিটি বন্ধ করে দেন। তিনি জানান, গনি সওদাগর ফুড এন্ড বেভারেজে সম্পূর্ণ অনুমোদনহীন অবস্থায় টেস্টলে নামে প্রায় ১৫ ধরণের চিপস, চানাচুর উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদিত এসব চিপস চানাচুর খাবার উপযোগী কিনা এ সংক্রান্ত কোনো পরীক্ষা বিএসটিআই থেকে করা হয়নি।

জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নকল চিপসের কারখানায় তৈরি হচ্ছে চিপস, ডাল ভাজা, চানাচুরসহ বিভিন্ন পণ্য। যেখানে যারা কাজে নিয়োজিত তাদের সবাই শিশু ও নারী শ্রমিক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে লাইসেন্সবিহীন কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে আটা, ময়দা, রং এবং বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হয় নকল চিপসসহ বিভিন্ন পণ্য। কারখানার ভেতরে শিশু ও নারী শ্রমিকরা অপরিস্কার-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে প্যাকিংয়ের কাজ করেন। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন রঙের পাত্র, সোডা, ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক অ্যামোনিয়াজাতীয় পদার্থ। এখানে বাহারি রকমের নামিদামি কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করে শিশু ও নারীদের দিয়ে তৈরি হচ্ছে চিপস, ডাল, মটরভাজা ও চানাচুরসহ শিশুদের লোভনীয় খাবার পণ্য। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও বন্ধ করলেও কিছুদিন পরই আবারো নাম পাল্টিয়ে গড়ে তোলা হয় নকল চিপস তৈরীর কারখানা। সম্প্রতি খাজা আইমণি ফুড এন্ড বেভারেজ শিফা নামে একটি নকল চিপস তৈরীর কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হাসান চৌধুরী।

জানতে চাইলে বিএসটিআইয়ের ফ্লিড অফিসার (সিএম) মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, বিভিন্ন উপজেলাতে ভ্রাম্যমান আদালতের অংশ হিসেবে আজকে আনোয়ারাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। আগেও একবার তাদের সতর্ক করা হয়েছিলো কিন্তু তারা বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানীর মোড়ক ব্যবহার করে তৈরী করছিলো তারা। বিএসটিআইয়ের নাম ব্যবহার করছিলো, কিন্তু তাদের বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন নেই। তখনই তাদের সিলগালা করে বন্ধ করেন দেন ম্যাজিষ্ট্রেট।

 

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.