পুনর্নির্বাচনের দাবি নৌকার পরাজিত প্রার্থীর

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল হকের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপি ও নৌকার কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পরাজিত এক চেয়ারম্যান প্রার্থী। তিনি ফল স্থগিতসহ পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার (১৩ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন নৌকার প্রার্থী আবদুল মাবুদ।

চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয় না পাওয়া নৌকার এ প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘৪টা পর্যন্ত ভোট হওয়ার নিয়ম থাকলেও ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ধোয়াপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত লাইনে কোনও ভোটার ছিল না। এরপরও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল হকের সমর্থকরা কেন্দ্রে প্রবেশ করে চশমা প্রতীকে জাল ভোট দিয়েছেন। এ সময় নৌকার এজেন্টরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মারধরের হুমকি দিয়ে জিম্মি করে রাখা হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীর স্বপক্ষে থাকা ডামি প্রার্থী ঘোড়া, অটোরিকশা, টেলিফোনসহ কয়েকটা প্রার্থীর এজেন্টরাও চশমার পক্ষে যোগ দিয়ে জাল ভোট দিতে সহযোগিতা করেন।’

তার অভিযোগ, ‘এত অনিয়মের পরও চশমা প্রতীকের লোকজন ওই কেন্দ্রে এক হাজার ৫০১ ভোট ও নৌকা ৬২৭ ভোট পেয়েছে। এতে চশমার প্রার্থী আবদুল হক নিশ্চিত পরাজয় দেখে ও শতাধিক লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে কেন্দ্রের বাইরে চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর প্রার্থী নিজে ও তার সঙ্গে বিএনপি নেতা শাহেদুজ্জামান বাহাদুরসহ প্রিসাইডিং কর্মকর্তার রুমে প্রবেশ করে। তারা জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে নৌকার এজেন্টদের কাছ থেকে খালি রেজাল্ট শিটে স্বাক্ষর আদায় করে এজেন্টদের বের করে দেয়। পরে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মহিলা মেম্বারের ১০০ করে ব্যালট নিয়ে চশমা প্রতীকের প্রার্থী ও তার সহযোগীরা সিল দিতে থাকে।’

তার দাবি, নৌকার প্রার্থী সেখানে গেলে তার গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এজেন্টদের বের করে দেওয়ায় ও দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় ছবি ধারণ করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি কয়েক দফায় রামুর ইউএনও, ওসিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নিজে ফোনে জানান। তারা এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর কেন্দ্রে আসেন। ইতোমধ্যে নৌকার কর্মী সমর্থকরা ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের ধোয়াপালং রাস্তার মাথা ও ধেছুয়াপালং স্টেশনে ব্যারিকেড দেয়। প্রশাসন দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছায় ততক্ষণে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ১৫০১ ভোটের স্কুলে ১৬০১ ভোট দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বারবার কল দেওয়ার পরও তিনি রিসিভ করেননি। অথচ খুনিয়াপালং ইউনিয়ন থেকে রামু উপজেলা পরিষদে পৌঁছার আগেই চশমা প্রার্থীকে ৪৮ ভোটে বিজয়ী দেখিয়ে রেজাল্ট শিট সামাজিক যোগাযোগ ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

৬নং ওয়ার্ড ধোয়াপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল, পুনর্নির্বাচন ও খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের ঘোষিত ফলাফল স্থগিতে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে দাবি জানান নৌকার এ প্রার্থী। একইসঙ্গে বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্তেও দাবি জানান।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.