চট্টগ্রামে রাতজুড়ে রাস্তায় দাঁপিয়ে বেড়ান তারা। বাহানা পাঠাওয়ের রাইড। মোটরসাইকেলে রাইডের যাত্রী নিয়ে খুঁজতেন ‘টার্গেট’। টার্গেট ব্যক্তিকে পেলে ছিনিয়ে নিতেন নগদ টাকা, মোবাইলসহ সবকিছু। নিতে না পারলে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে শোধ তুলতেন ব্যর্থতার।
বিকাশের পতেঙ্গা জোনের ডিস্ট্রিবিউটরের অভিযোগ ধরে নগরের ৫ কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বের করে রাইডারের বেশ ধরা চিহ্নিত ছিনতাইকারী ১৯ মামলার আসামি শাহ ডিপজল (৪১) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একইসঙ্গে তার স্ত্রী রোজিনা বেগম (২৭) ও সহযোগী রাজু দেবনাথ (৩৬) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ইপিজেড থানার আকমল আলী রাস্তার খালপাড়ের জাহাঙ্গীরের বিল্ডিং থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সেখান থেকে ডিপজলের দেহ তল্লাশি করে একটি এলজি, এক রাউন্ড কার্তুজ এবং ৫টি এক হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও বাসার প্লাষ্টিকের ওয়ারড্রব থেকে পাঁচশ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
ডিপজলের গ্রামের বাড়ি রাউজানের কদলপুর ফরিদসাহেবের বাড়ী। সে ইপিজেড থানার কাজীর গলির জাহাঙ্গীরের বিল্ডিং-এ ভাড়া থাকতেন। রাজু পটিয়ার জিরি ইউপি সুনীল সওদাগরের বাড়ীর রতন দেবনাথের ছেলে।
পুলিশ জানায়, রুবেল এবং মাহফুজ পেশায় বাইক চালক। তারা পাঠাও অ্যাপসের মাধ্যমে ভাড়ায় বাইক চালাতো । রুবেল আকমল আলী রোডের পকেট গেইট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে। বাইক চালানোর পাশাপাশি সে নগদ টাকার বাহককে খুঁজে বেড়াতো। ডিএসও আসলাম নামে পতেঙ্গার মাইজপাড়ায় এলাকার এক বিকাশের ই-লোড ব্যবসায়ীকে টার্গেট করে। সে জানতো ওই ব্যবসায়ী নগদ টাকা সংগ্রহ করতো। তার কালেকশন তিন লাখ টাকার বেশি। বিষয়টি তার সহযোগী বাইক চালক মাহফুজকে জানালে মাহফুজ রাজুকে জানায়। রাজু ছিনতাইকারী সাত্তার শাহ ডিপজলকে জানালে পরিকল্পনা আঁটে ছিনতাইয়ের। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী ছিনতাই করতে মোটর সাইকেলে চেপে সাত্তার শাহ ডিপজল, রাজু দেবনাথ এবং মাহফুজ মাইজপাড়ায় কন্ট্রোলের মোড় এলাকায় অবস্থান নেয়। মাহফুজ বাইকটি চালাচ্ছিল। রুবেল আরেকটি মোটর সাইকেল নিয়ে কিছুটা দূরে অবস্থান করে। ওই ব্যবসায়ী সর্বশেষ বিকাশ এজেন্টের সাথে লেনদেন শেষে ঘটনাস্থলের দিকে পায়ে হেঁটে রওনা দেয়। তখনই পিছন দিক হইতে মোটর সাইকেল নিয়ে তারা ওই ব্যবসায়ীর গতিরোধ করে ব্যাগ টানাটানি করে ধারালো ছোরা দিয়ে আঘাত করে জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে এই ঘটনায় বিকাশের পতেঙ্গা জোনের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস সুপারভাইজার মো. কামরুল হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা তিন জনের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে ১৯ মামলার আসামি ডিপজলকে চিহ্নিত করা হয়। পরে সোমবার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হোসেন কবির বলেন, নগরের বিভন্নস্থানে ছিনতাই করতো সাত্তার শাহ ডিপজল। আমরা নগরের ৫ কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডিপজলসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করি। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি এলজি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিনটি মামলা করে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম সংবাদ/ আই এইচ।