‘শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদ দ্বিগুণ হয়েছে’

মহামারি বহু মানুষের অর্থনৈতিক দুর্দশা চরমে পৌঁছলেও, বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেরদের সম্পদ আরও বেড়েছে বলে জানাচ্ছে ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা অক্সফামঅক্সফামের ওই প্রতিবেদনের বরাতে বিবিসি জানাচ্ছে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর সম্মিলিত সম্পদ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।

অন্যদিকে, বিশ্বজুড়ে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীতে দৈনিক ২১ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।

অক্সফামের প্রধান নির্বাহী ড্যানি শ্রীসকান্দারাজাহ বলেন, অর্থনীতি, ব্যবসা ও রাজনৈতিক খাতের প্রভাবশালীদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্যই প্রতি বছর দাভোস সম্মেলনের আগে তারা এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে।

তিনি বলেন, মহামারি চলাকালীন প্রতিদিন একজন করে নতুন শতকোটিপতি তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে লকডাউন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হ্রাস, বৈশ্বিক পর্যটন সংকোচনের কারণে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ মানুষ লোকসানে পড়েছে এবং এর ফলে, ১৬ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিম্নসীমায় নেমে গেছে।

অক্সফামের প্রধান নির্বাহী হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার খুব গভীরে কোথাও ত্রুটি রয়ে গেছে।

এদিকে, সুইজারল্যান্ডের নৈসর্গিক স্কি রিসোর্ট দাভোসে প্রতি বছর আয়োজিত সভায় সাধারণত কয়েক হাজার রাজনৈতিক ও করপোরেট প্রতিনিধি, বিনোদন জগতের তারকা, প্রচারকর্মী, অর্থনীতিবিদ এবং সাংবাদিকরা জড়ো হয়ে আলোচনা, পান পর্ব এবং মতবিনিময়ে অংশ নেন।

তবে মহামারির কারণে এবারও ওই সভা অনলাইনে হচ্ছে। যা শুরু হচ্ছে সোমবার (১৭ জানুয়ারি)। শুরুতে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় তা বাদ দেওয়া হয়।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের বরাতে অক্সফামের প্রতিবেদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী হিসেবে- ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, বেরনাহ আরনোহ ও পরিবার, বিল গেটস, ল্যারি এলিসন, ল্যারি পেইজ, সের্গেই ব্রেইন, মার্ক জাকারবার্গ, স্টিভ বলমার ও ওয়ারেন বাফেটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মহামারি শুরুর পর যৌথভাবে তাদের মূলধন ৭০০ বিলিয়ন বা সাত লাখ কোটি ডলার থেকে বেড়ে দেড় ট্রিলিয়ন বা ১৫ লাখ কোটি মার্কিন ডলার হয়েছে। তবে তাদের সবার সম্পদ সমানভাবে বাড়েনি, যেমন ইলন মাস্কের সম্পদ ১০০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, অন্যদিকে বিল গেটসের সম্পদ বেড়েছে ৩০ শতাংশ।

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যউপাত্তের ভিত্তিতে করা অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগের অভাব, ক্ষুধা, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রতি চার সেকেন্ডে একজনের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে।

কোভিড মহামারির পর নতুন করে ১৬ কোটি মানুষের দৈনিক জীবনযাপনের ব্যয় সাড়ে পাঁচ ডলারের নিচে নেমে গেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে দিনে সাড়ে পাঁচ ডলার খরচ করার সামর্থ্যকে দারিদ্র্যসীমা হিসেবে বিবেচনা করে বিশ্ব ব্যাংক।

অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারীর কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ কমাতে বাধ্য হয়েছে কারণ জাতীয় ঋণ বাড়ছে। লিঙ্গভিত্তক সমতা অর্জন পিছিয়ে পড়েছে, কারণ ২০১৯ এর তুলনায় বর্তমানে এক কোটি ৩০ লাখ কম নারী কর্মক্ষেত্রে কাজ করছে এবং দুই কোটির বেশি মেয়ে আর কখনো বিদ্যালয়ে ফিরতে না পারার ঝুঁকির মুখে। ব্রিটেনে বাংলাদেশি এবং যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকানসহ জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী কোভিডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম সংবাদ/ আই এইচ।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.