সমকালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ড. আবু রেজা নদভী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় ইচ্ছুক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী বিনা বেতনে পড়াশোনা করছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থী। এ বিষয়গুলো দেখার জন্য স্টাফ ডেভেলপমেন্ট ও স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ডিভিশন নামে আলাদা একটি বিভাগ রয়েছে। প্রতিবছর দরিদ্র মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের প্রায় ৩ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা এবং বৃত্তি প্রদান করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে বিনা ফিতে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’

অবকাঠামো উন্নয়ন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. আবু রেজা নদভী বলেন, ‘বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড শিক্ষার্থীদের জন্য ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি কাজ করেছে। মডার্ন সায়েন্স ফ্যাকাল্টির অধীনে আর্কিটেকচার ও আর্টস অ্যান্ড হিউমেনেটিস অনুষদের অধীনে অ্যারাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া খোলা হয়েছে ইনস্টিটিউট অব মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজেস। আরও নতুন কিছু বিভাগ খোলার পরিকল্পনা করছি। ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা হল নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে শিগগিরই। আইআইইউসির বহদ্দারহাট ক্যাম্পাসে এক হাজার আসনের ১৫ তলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন প্রশাসনিক ভবনের পাশাপাশি নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন অনুষদ ভবনও। নতুন এসব অবকাঠামো শিক্ষার্থীদের পাঠদানে নতুন মাত্রা যোগ করবে।’

কেন এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নেওয়া উচিত- ভর্তিচ্ছুদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আন্তর্জাতিক ইসলামী ইউনিভার্সিটির নতুন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু রেজা নদভী বলেন, ‘চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আইআইইউসি প্রথম সারির একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমরা গবেষণার প্রতি নতুন করে জোর দিচ্ছি। বিশ্বের ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা চুক্তি আছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও সেমিনারে অংশ নিয়ে থাকেন। আইআইইউসিতে শুধু মুসলিম নয়, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অমুসলিম শিক্ষার্থীও পড়াশোনা করছে।’

‘অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, ইন্টারনেট ল্যাব, ৩৮০ এমবিপিএস ইন্টারনেট সুবিধা, প্রায় ১৫ হাজার ৫০০টি জার্নাল, ই-বুক এগুলো আমাদের প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক মানের করে তোলে। আমরা আইআইইউসিকে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করছি।’ যোগ করেন অধ্যাপক ড. আবু রেজা নদভী।

ক্যাম্পাস যেহেতু শহরের বাইরে, সেহেতু যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন কোনো উদ্যোগ আছে? এর উত্তরে অধ্যাপক ড. আবু রেজা নদভী বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটল ট্রেন চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ২৯ সেপ্টেম্বর স্টেশন ও প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। ২০২৬ সালের মধ্যে এই স্টেশন চালু হবে বলে আশা করছি।

আইআইইউসির শিক্ষাকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায় পূর্ণকালীন শিক্ষক কম থাকে, অতিথি শিক্ষক ক্লাস নেয় বেশি। কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষক স্থায়ী। ফলে কোনো সমস্যা হলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, যা অতিথি শিক্ষকদের সঙ্গে সম্ভব নয়। সার্বক্ষণিক ফ্যাকাল্টিতে থাকেন বলে কোনো সমস্যা হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী দ্রুত যোগাযোগ সম্ভব হয়। শিক্ষকরাও অনেক হেল্পফুল, যেকোনো বিষয়ে যোগাযোগ করলে তারা সাধ্যমত সাহায্য করেন।’

চট্টগ্রাম সংবাদ/ আই এইচ।