চট্টগ্রামে ইট বিক্রি বন্ধ: মালিক সমিতির ৬ নেতাকে আইনি নোটিশ

চট্টগ্রাম সংবাদ ডেস্ক

আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও রায়ের বিরুদ্ধে কর্মসূচী দেওয়ায় আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তিনি চট্টগ্রাম ইটভাটা মালিক সমিতির আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেনসহ ৬জনকে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। আইনি নোটিশ প্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন, চট্টগ্রাম জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সেক্রেটারি সেকান্দর মিয়া, লোহাগাড়া ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ আবিদ হাসান মানু, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ ছরওয়ার কোম্পানি, পশ্চিম সাতকানিয়া ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম (লেদু চেয়ারম্যান) এবং সাধারণ সম্পাদক হাসান লিটন (কমিশনার)।

২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যে আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও আদেশ পালনে প্রতিবন্ধকতা বন্ধ করে তা জানাতে বলা হয়েছে। নতুবা তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে বলে জানানো হয়েছে ওই আইনি নোটিশে।

আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি, আদেশ অকার্যকর করার জন্য বিভিন্ন ইটভাটা মালিক সমিতির নামে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা, সাংবাদিক সম্মেলন করে আদেশ প্রত্যাহার না করা হলে ইট বিক্রি বন্ধসহ বিভিন্ন কর্মসূচী দেয়ার মাধ্যমে আদেশ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার প্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও জরিমানার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য
চট্টগ্রামে ইট বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করে চট্টগ্রাম জেলা ইটভাটা মালিক সমিতি।

ওই আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, সংবিধানের আর্টিকেল ১১১ ও ১১২ অনুচ্ছে অনুসারে রায় মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সংবিধানের আর্টিকেল ১০৮ অনুসারে আদালতের রায় অমান্য বা প্রতিবন্ধকতা আদালত অবমাননার শামিল এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যেহেতু হাইকোর্টের আদেশে চট্টগ্রামের সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সুতরাং এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে যে কোন প্রতিবন্ধকতা ও কর্মকাণ্ড আদালত অবমাননার শামিল।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের আদেশ অনুসারে যাতে প্রশাসন পদক্ষেপ নিতে না পারে সেজন্য ইটভাটা মালিক সমিতি বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়েছে। যা আদেশ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। তাই আদালত অবমাননায় চট্টগ্রাম ইটভাটা মালিক সমিতির আহ্বায়কসহ ৬জনকে ডাকযোগে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পরিবেশ রক্ষায় চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ওই রিটের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেন আদালত। আদালতের নির্দেশে কার্যক্রম শুরু হলে আদেশের বিরুদ্ধে প্রায় ১০১ জন ইটভাটা মালিক ৬টি আপিল করে আদেশ স্থগিত বা স্থিতিবস্থা বজায়ের আবেদন করেন। আপিলগুলি শুনানিতে চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত বা স্থিতিবস্থা বজায় রাখার কোন আদেশ দেননি। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতের আদেশ অনুসারে লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা বন্ধের কাজ অব্যাহত রাখা হয়। পরে আদালত গত ৩১ জানুয়ারি ও ২৫ ফেব্রুয়ারি আবারও নির্দেশ পালনের আদেশ দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.