জঙ্গল সলিমপুরে ইয়াবার টাকায় রোহিঙ্গা মা-ছেলের অবৈধ স্বর্ণের ব্যবসা

চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুর থেকে দেড় কোটি টাকারও বেশি অবৈধ স্বর্ণসহ দুই রোহিঙ্গাকে আটক করেছে র‌্যাব। শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে ১৪ ভরি ওজনের ৮টি স্বর্ণের বার, ৫টি স্বর্ণের চেইন, ১ জোড়া স্বর্ণের বালা, ৩ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ৩টি স্বর্ণের আংটি, ৪টি স্বর্ণের লকেট উদ্ধার করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ১ কেটি ৫৩ লাখ টাকা।

আটকরা হলেন—আসমত উল্লাহ (২৪) ও মোছাম্মৎ ছহুরা খাতুন (৬৮)। তারা সম্পর্কে মা-ছেলে।

র‌্যাব জানিয়েছে, ২০১২ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আসমত উল্লাহর পরিবার। পরে ২০১৪ সালে ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে বাবা-ছেলে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সেখানে ৬ বছর থেকে ২০২০ সালে সৌদি পুলিশের হাতে ধরা পরে আবারও বাংলাদেশে ফিরে কক্সবাজারে আশ্রয় নেন। সেখানে থেকে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তারা। মৃত্যু হলে একজনের সূত্র ধরে কক্সবাজার থেকে মাকে নিয়ে চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুরে ঘাঁটি গাড়েন আসমত উল্লাহ। সেখানে নিজেদের বসতবাড়ি তুলে ইয়াবা ব্যবসার পাশাপাশি অবৈধভাবে স্বর্ণের বার সরবরাহ শুরু করেন তারা। তাদের এ ব্যবসাকে আড়াল করতে ওই এলাকায় মাদ্রাসা স্থাপন করে ছোট শিশুদের পড়ালেখা শেখান তারা।

শনিবার (৩০ জুলাই) নগরের বহদ্দারহাটস্থ চান্দগাঁও র‌্যাব-৭ এর ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘গত ২৮ জুলাই টেকনাফ সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৩ লাখ ৫৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সূত্র ধরে জানতে পারি চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুরে একটি পরিবার অবস্থান করছে যারা দীর্ঘদিন ধরে এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে মা-ছেলেকে আটক করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ৮টি স্বর্ণের বার (প্রতিটির ওজন ১৪ ভরি) উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে আলমারি থেকে ৫টি স্বর্ণের চেইন, ১ জোড়া স্বর্ণের বালা, ৩ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ৩টি স্বর্ণের আংটি, ৪টি স্বর্ণের লকেট উদ্ধার করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। এগুলো তারা বিক্রির জন্য চেষ্টা করছিল বলে জানিয়েছে আসামিরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইয়াবা ব্যবসার লভ্যাংশে রোহিঙ্গারা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে স্বর্ণের বার ও বিস্কুট সরবরাহ কাজ করছে।’

এম এ ইউসুফ বলেন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছে, টেকনাফ থেকে মিয়ানমারের স্বর্ণেরবার নিয়ে আসে এবং সেগুলো চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাপ্লাই দেয়। এছাড়া ঢাকায়ও তারা সরবরাহ করে থাকে। তারা এ কাজের সঙ্গে গত ২ বছর ধরে জড়িত রয়েছে। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছে। তাদেরও আটক করা হবে।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.