এক মাসের বেশি সময় ধরে গোলাগুলি চলছে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে। গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী এলাকার আঞ্জুমান পাড়ার সীমান্ত এলাকায়। এদিন ৪৫ মিনিট ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরণে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয়রা বলছে, গতকাল নয় গত এক সপ্তাহ ধরে এ এলাকায় সীমান্ত ঘেঁষে গোলাগুলি চলছে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) উখিয়ার পালংখালী এলাকার আঞ্জুমান পাড়ার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
তারা বলছেন, আঞ্জুমান পাড়া দক্ষিণ ফাঁড়িরবিল ও পূর্ব ফাঁড়িরবিল সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের ঢেকিবনিয়া, চাম্বাকাটা,বলিপাড়া, কোয়াইংচিপং ও মেধিপাড়া বরাবর পাহাড়ি এলাকায় এসব গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
পালংখালী আঞ্জুমান পাড়ার সীমান্ত এলাকার দোকানদার বেলাল উদ্দীন জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে এই সীমান্তের একেবারে কাছেই মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে গোলাগুলি চলে আসছে।
আঞ্জুমান পাড়া দক্ষিণ ফাঁড়িরবিল এলাকার বাসিন্দা নূরুল বশর (৬৫) বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে গোলাগুলি চললেও মঙ্গলবার ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এদিন সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নয়বার গোলাগুলি হয়েছে। এসময় মর্টারশেল নিক্ষেপের মতো শব্দ শোনা গেছে। কেঁপে উঠেছে এপারও। মনে হয়েছে মাটির ঘরগুলো ধ্বসে পড়বে। বিকট শব্দে শিশুরা চিৎকার দিয়ে কান্না করে। এছাড়া চার দিন আগে একটি চৌকি লক্ষ্য করে বিমান থেকে গোলা বর্ষণ হতে দেখা গেছে।’
আঞ্জুমান পাড়া পূর্ব ফাঁড়িরবিল এলাকার কৃষক নাজির হোসেন (৪০) বলেন, ‘মঙ্গলবারের গোলাগুলির সময় সীমান্তের কাছে ধানখেত ও মৎস্য ঘের কাজ করছিলো। গোলা বর্ষণ হলে সবাই হুলস্থুল করে পালিয়ে আসে। এরপর সারাদিন কেউ কাজ করতে যায়নি।’
পালংখালী ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাফরুল ইসলাম বলেন, ‘গোলাগুলির তীব্র বেড়ে যাওয়ায় পুরো আঞ্জুমান পাড়া সব মানুষ চরম আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে। অনেকে ভয়ে মৎস্য ঘের ও ধানখেতে কাজ করতে যাচ্ছে না।’
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত এলাকার গোলাগুলির ঘটনাটি প্রশাসনের উচ্চ মহলে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে সতর্কতা বজায় রাখার জন্য নাগরিকদের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘মঙ্গলকার সকালে উখিয়া সীমান্তের গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার কথা স্থানীয়রা অবহিত করেছে। এখানে সীমান্তের ৩০০ মিটারের ভেতরে ১০০ পরিবার রয়েছে। আমরা তাদের খোঁজখবর রাখছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’