নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে ভ্যাকসিনের চতুর্থ ডোজের প্রয়োগ। আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এই চতুর্থ ডোজ প্রদান কার্যক্রমে দুই সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ শর্ত থাকছে না। অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর নিয়মিতভাবেই চলবে ভ্যাকসিনের চতুর্থ ডোজ প্রয়োগ কার্যক্রম।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে করোনার চতুর্থ ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু করছি। দেশের প্রতিটি কেন্দ্রেই অন্যান্য ডোজ ভ্যাকসিনের সঙ্গে চতুর্থ ডোজও প্রয়োগ করা হবে। এ লক্ষ্যে আমাদের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।’
এর আগে, ৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুর কবির জানান, দেশে পরীক্ষামূলকভাবে রাজধানীর সাতটি কেন্দ্রে কিছু মানুষকে চতুর্থ ডোজের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। দুই সপ্তাহ তাদের পর্যবেক্ষণ শেষে সারাদেশেই দেওয়া হবে। তবে অন্যান্য ডোজের মত চতুর্থ ডোজ আপাতত গণহারে দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানায় অধিদফতর। এ সময় জানানো হয় প্রথম ধাপে পাঁচ শ্রেণির মানুষ পাবে দ্বিতীয় বুস্টার বা চতুর্থ ডোজের ভ্যাকসিন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ষাটোর্ধ্ব, সম্মুখযোদ্ধা ও যাদের একাধিক জটিল রোগ রয়েছে তাদের করোনা ভ্যাকসিনের চতুর্থ ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার চলমান ক্যাম্পেইন শেষ হচ্ছে। তাই এবার চতুর্থ ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
আহমেদুল কবির বলেন, চতুর্থ ডোজ টিকাদানের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনায় রাজধানীর সাতটি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, সরকারি কর্মচারী, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে ১০০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এসএমএসের মাধ্যমে আগের দিন নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন নেওয়াদের দুই সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কোনো ধরনের জটিলতা দেখা না দিলে নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
চতুর্থ ডোজ দেওয়ার কারণ উল্লেখ করে আহমেদুল কবির বলেন, ‘ভ্যাকসিন নেওয়ার চার মাস পর সাধারণত অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে যায়। এছাড়া সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এর আগে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের চতুর্থ ডোজ বা দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ প্রয়োগের সুপারিশ করে সরকারের কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। ৩০ নভেম্বর স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) পরিচালক ও লাইন ডিইরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান।