ফোনালাপ ফাঁসের মামলায় আমীর খসরুর বিচার শুরু

পাঁচ বছর আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় ছড়িয়ে পড়া ফোনালাপের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নওমীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১২ জুন) চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আমীরুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানী ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হয়। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় নওমী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আমীর খসরুর একটি অডিও কথোপকথন ফাঁস হয়। ওই ঘটনায় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর ২০১৮ সালের ৪ অগাস্ট দুইজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন (সংশোধিত ২০১৩৫৭ (২) ধারা) এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারায় দায়ের করা ওই মামলার এজাহারে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতমূলক’ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা এবং ‘উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

ওই মামলায় ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর উচ্চ আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় আদালতের নির্দেশে ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীকেও আসামি করা হয়। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পক্ষ থেকে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের দিন আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছিল।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দীন জানান, বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আদালত আমীর খসরুসহ দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ওই আইনেই দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।’

আইনজীবী অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দীন বলেন, ‘ফোনালাপের ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে কোনো প্রমাণ মেলেনি। তবে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ গঠনের কোনো উপাদান নেই বলে মনে করি।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.