নির্বাচনকালে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বদলি নয়

নির্বাচনী সময়সূচি জারি হওয়ার পর থেকে ফলাফল ঘোষণার পর ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে বদলি করা যাবে না।

সোমবার (১৯ জুন) সব মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

চিঠিতে জাতীয় সংসদের শূন্য ঘোষিত আসনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর বিধান অনুসরণ ও নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি অনুসারে ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ শূন্য আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।

‘নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে। এসব কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মধ্য থেকে কারও কারও নির্বাচনে অন্যান্য দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন হতে পারে। সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়াও নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব প্রদান করা হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।’

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনের কাজে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুসারে নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তিনি তার নিয়োগের পর নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন। এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪৪ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে নির্বাচনী সময়সূচি জারি হওয়ার পর থেকে ফলাফল ঘোষণার পর ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতীত কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করা যায় না।

এ অবস্থায়–

(ক) এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি অনুযায়ী পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সরকারের সব মন্ত্রণালয়/বিভাগকে তাদের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে অনুরোধ করা হলো।

(খ) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকাদের প্রতিও একই নির্দেশনা জারি করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হলো।

(গ) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ১৫ দিন অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সাথে পরামর্শ ছাড়া নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা যাবে না। সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং আধা-সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাকে নির্বাচনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীকে ছুটি প্রদান এবং অন্যত্র বদলি করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হলো।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এসব নির্দেশনা জারিসহ আনুষঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন করে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ সরকারি/আধা-সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি দপ্তর/সংস্থা/প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা/শিক্ষক/কর্মচারীকে সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান সম্পর্কে সচেতন থেকে নির্বাচনী দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য অনুরোধ করা হলো।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.