জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন চট্টগ্রামের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমী

 

নিজস্ব প্রতিবেদক 

জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীকে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা এবং বিশেষ কাজে আনন্দময় বিচারকাজে পরিবেশ সৃষ্টিতে অনন্য ভূমিকা রাখছেন চট্টগ্রামের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমী।

তিনি বিগত ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ইংরেজি তারিখে যুগ্ন জেলা জজ ও পরিবেশ আদালত চট্টগ্রামে বিচারক প্রথম দায়িত্ব পালন শুরু করেন এবং প্রায় দীর্ঘ এক বছর এক মাস যুগ্নু জেলা জজ ও পরিবেশ আদালতের দায়িত্ব পালন করে ১৯ মে ২০১৮ ইংরেজি তারিখে সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে ২০ মে ২০১৮ ইংরেজি তারিখে তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম হিসেবে যোগদান করেন। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম হিসেবে যোগদানের পর থেকেই তিনি বিচারবিভাগ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সহিত উনার অধীনস্ত বিচারকগণ কে পরিচালনা এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের সুশৃংখলা সহ কাজের অগ্রগতি করার লক্ষ্যে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রত্যেকটা বিচারক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে মাস শেষে প্রণোদনা হিসেবে কাজের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন তিনি নিজে। টাকার অংকে এ পুরস্কার অনেকক্ষেত্রে নগণ্য হলেও এ পুরস্কার প্রদান করেন উনার নিজস্ব তহবিল থেকে। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চীফ জুড়সিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন সি আর কোট , পুলিশ কোর্ট জুডিসিয়াল সেকশন এর প্রত্যেকটা কাজের তদারকি করছেন তিনি একা।

 

চট্টগ্রামের মেয়ে তিনি, আছে পরিবার-পরিজন, কিন্তু সকাল নটায় অফিসে এসে বাসায় যান রাত নয়টায়, কখনোবা দশটায় , আবার কখনোবা আটটায়। একজন মহিলা বিচারক হিসেবে অনেক সময় পুরুষের চেয়েও বেশি কাজ করে এবং মামলা নিষ্পত্তিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন।

 

বিগত ২০২০ সালের করোনা মহামারী থেকে সারাদেশে যখন মামলাজট বাড়তে থাকে তখন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চট্টগ্রামে এই মামলার জট কমতে থাকে।

 

দেশের মহামারী করোনাভাইরাস ও ওমিক্রন এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের সম্মুখে ডিসপ্লে বোর্ড এর মাধ্যমে সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাস সচেতনতা মূলক প্রচার চালিয়ে যান।

 

মামলা নিষ্পত্তিতে উৎসাহিত করার জন্য যে সকল মামলা আপসে নিষ্পত্তি করেন সে সকল পক্ষ থেকে তিনি একটি করে চকলেট দিয়ে ভালবাসার বন্ধন আরো বাড়িয়ে দেন। এটি যেন চকলেট নয় পারিবারিক বন্ধন অটুট করার একটি বহন।

 

উনার আদালতে ছোট কোনো শিশু দেখলেই তিনি প্রত্যেকটি শিশুকে একটি করে চকলেট দেন যেটা নজর কাড়ে আদালতে সকল আইনজীবী ও বিচারপতি জনগণসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের।

 

এই বিষয়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন্নাহার রুমীর সাথে সরাসরি কথা বললে তিনি জানান “আমি আমার ম্যাজিস্ট্রেসিতে সবসময় স্বচ্ছ জবাবদিহিতা এবং গতিসম্পন্ন রাখতে এ সকল কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। চট্টগ্রাম আমার প্রাণের শহর এই শহরে সত্য ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছিল আমি আমার দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খানুভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি। আমি সব সময় বারো বেঞ্চের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নিজে দায়িত্ব পালন করেছি এবং আমার অধীনস্থ বিজ্ঞ বিচারকগণকে দায়িত্ব পালনে পরামর্শ দিয়েছি।”

 

জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হলফনামা শাখার অনিয়মের কথা তুলে ধরলে তিনি সাথে সাথে নাজির এবং বেঞ্চ সহকারীকে ডেকে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং হলফনামা সংক্রান্তি কার্যক্রমের পুনঃবিন্যাস করার আদেশ প্রদান করেন। বিচার বিভাগে যেন দুর্নীতি না হয় সে কারণে তিনি বারবার আমলী আদালত পরিবর্তন করতেন।

 

উনার এই পদোন্নতি প্রাপ্তিতে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এ এস এম বজলুর রশিদ ও জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমূল চৌধুরী সহ চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যগণ যেমনি ভাবে খুশি হন তেমনিভাবে একজন ন্যায় পরায়ণ বিচারকের বিদায়ে মর্মাহত হন এবং উনার বিদায় শূন্যতা অনুভব করেন।

 

তিনি পদোন্নতি পেয়ে শেরপুর জেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.