শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্য প্রস্তুত বাঁশখালীর ৮৭ পূজা মন্ডপ

বাঁশখালী  প্রতিনিধিঃ
সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে সাজ সজ্জার কাজ সম্পন্ন । গত শনিবার মহালয়ার মধ্যে দিয়ে পূজার ঘনঘটা শুরু হলেও আগামী ২০ অক্টোবর শুক্রবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। পূজা শুরুর শেষ মুহূর্তে এসে বেড়ে গেছে বাঁশখালীর প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা। প্রতিমায় রং তুলি শেষ আঁচড় দিয়ে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে ব্যতিব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। উপজেলা পূজা উদযাপন সূত্রে জানা গেছে, এবার বাঁশখালীতে একটি পৌরসভা ও চৌদ্দটি ইউনিয়নে ১৬০ টি ঘট পুজোসহ ৮৭টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে বাঁশখালী পৌরসদরে ১৭ টি, সাধনপুর ইউনিয়নে ১৪ টি, কালীপুর ইউনিয়নে ১৫ টি,বৈলছড়ী ইউনিয়নে ৬ টি, কাথরিয়া ইউনিয়নে ১ টি, চাম্বল ইউনিয়নে ১২ টি, নাপোড়া শেখেরখীল ইউনিয়নে ৩ টি, বাহারচড়া ইউনিয়নে ৪ টি, শীলকূপ ইউনিয়নে ৪ টি, সরল ইউনিয়নে ৪ টি ও পুকুরিয়া ইউনিয়নে ৭ টি মন্ডপে পূজা হবে। কালীপুর এলাকার প্রতিমা শিল্পী পিন্টু আচার্য্য জানান, এবার তিনি বাঁশখালী সহ বাঁশখালীর বাইরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপের ৩০ টি প্রতিমা তৈরীর কাজ পেয়েছেন। তিনি ৭-৮ জন সহযোগীকে নিয়ে সমানতালে চালিয়েছেন প্রতিমা তৈরির কাজ। ইতিমধ্যে অর্ডার নেওয়া সবগুলো প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন তারা। পাশাপাশি প্রতিমার গায়ের শেষ মুহূর্তের রং তুলির আঁচড় দেওয়াও শেষ করেছেন। তাদের হাতে তৈরি সবগুলো দুর্গা প্রতিমায় এবার আধুনিকতার ছোঁয়া রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি । বাঁশখালী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর প্রণব কুমার দাশ বলেন, এবার উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে ১৬০ টি ঘট পূজোসহ ৮৭ টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে পুজোকে ঘিরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে আমরা বিভিন্ন মতবিনিময় সভা করেছি। সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন । এবারের পূজায় বাঁশখালী পৌরসভা, নাপোড়া , চাম্বল ,কালীপুর ও সাধনপুর ইউনিয়নের কোলাহল সংঘ টি পূজা মন্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এর মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ পশ্চিম চাম্বল বাংলা বাজার সার্বজনীন বুড়াকালী মন্দির, দক্ষিণ জলদী করুনাময়ী কালী মন্দির ও সাধনপুর কোলাহল সংঘ সার্বজনীন দুর্গোৎসব পূজা মন্ডপে আটজন আনসার, কম ঝকিপূর্ণ পূজা মন্ডপে ৬ জন আনসার ও সাধারণ পূজা মন্ডপে ৪ জন আনসার বাহিনী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে বলে ও জানিয়েছেন তাঁরা। বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামাল উদ্দিন পিপিএম বলেন,শারদীয়া দুর্গাপূজায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একটি মাত্র পূজামন্ডপে পর্যাপ্ত তিন স্থরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জন সুষ্টভাবে সম্পন্ন করা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টার পুলিশের সদস্যদের দায়িত্বে থাকবে। বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার জানান,হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মাবলম্বীর শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পূজায় সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পূজা চলাকালে প্রতিটি পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আনসার সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে।
মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.