চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এক গৃহবধূকে শ্বাসরুদ্ধকরে হত্যার অভিযোগে ওঠেছে পাল্টাপাল্টি প্রশ্ন।
গৃহবধূর শশুরবাড়ি আর পুলিশের দাবী আত্মহত্যা হলেও সেটা যৌতুকের দাবীতে হত্যা হিসেবেই জোর দাবী করছে নিহত নিশির পিতামাতা।
বুধবার দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ ঢেমশার ১নং ওয়ার্ডের নাপিতের চর এলাকার কাইমার পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম নিশি আক্তার(১৯)তিনি নাপিতের চর এলাকার কাইমার পাড়ার মৃত জালাল আহমদের পুত্র মোর্শেদুল আলমের স্ত্রী।
মোর্শেদুল আলম ভালবেসে তিনমাস আগে এই নিশি আক্তারকে বিয়ে করেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
নিশি আক্তারের শশুর বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার উত্তর ঢেমশার নাপিতের চর এলাকায় হলেও তার পৈতৃক বাড়ি গাজীপুর জেলায়।
নিহত নিশি আক্তারের পিতা সবুজ মিয়া(৫৫)সাতকানিয়ার কেঁওচিয়ায় টমটম রিক্সার মেকানিক কাজ করার সুবাদে ওইখানে ভাড়া বাসায় থাকেন,অপরদিকে এই গ্যারেজে প্রায়সময় ইঞ্জিন চালিত রিক্সা ঠিক করতে যায় মোর্শেদ,সেও টমটম চালক।
বিয়ের তিন মাসের মাথায় ১লক্ষ টাকা এনে দেয়ার জন্য নিশিকে প্রায় সময় চাপ দিত স্বামী মোর্শেদ এমনটাই গণমাধ্যমে জানিয়েছেন নিহত নিশির পিতা হতদরিদ্র মেকানিক সবুজ মিয়া।
নিশির মা কেরানীহাট আশশেফা হাসপাতালে মেয়ের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে হাউঁমাউ করে কান্নাকাটি করে পিতার ন্যায় একই অভিযোগ তুলে বলেন-মূলত যৌতুকের জন্যই আমার মেয়ে নিশিকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে ফাঁসি খেয়েছেন বলে চালিয়ে দিতে চায় শশুর বাড়ির লোকজন।
তিনি আরো বলেন আমার মেয়ের মুখ আর কান লাল গলায় ফাঁসির কোন চিহ্ন নেই।
তবে তারা আমার মেয়েকে বার বার জ্বালাতন করত।
এদিকে তিনি আরো বলেন, নিহত নিশির গর্ভে তিনমাসের সন্তানও আছে তবুও মেয়েকে তারা পাষণ্ড ভাবে খুন করেছেন।
এদিকে নাপিতের চর এলাকায় মোর্শেদের বাড়িতে গেলে এলাকার লোকজন গণমাধ্যমকে বলেন- স্বামী মোর্শেদরা তাদের সমাজচ্যুত।
তাই তারা পারিবারিক ভাবে সুবিধার নয় তাই এলাকাবাসী এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নয়।
অপরদিকে অভিযুক্ত মোর্শেদের মা প্রতিবেদককে বলেন,আমি বিলে ছিলাম আমার ছেলে আর ছেলের বউ বাড়িতে কি করছে আমি অবগত নয় মোটেও।
এবং লোকজন এসে চিল্লাচিল্লি করলে আমি জমি থেকে এসে মাঝ পথ থেকেই হাসপাতালে গেলাম এবং আমার প্রতিবেশীরা আমাকে আমার বাড়ি থেকে বোরখা নিয়ে দিল।
তিনি আরো বলেন,আমার ছেলের বউ নিজেই ফাঁসও খেয়েছেন তাদের শোবার কক্ষে,এই দেখেন ঘরে এসে চেক করেন।
পক্ষান্তরে ঘরের ভেতর দেখিয়ে দেয়া বাড়ির বিমের সাথে ফাঁস খাওয়ার কোন আলামত দেখা যায়নি এবং ঘাতকের মা নিজেও কোন আলামতের নিশানা প্রমাণ করতে পারেননি।
তবে তিনি সুদৃঢ় গলায় বলেন পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টে যা আসে তা এর উপর কোন কথা নেই।
পক্ষান্তরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই এলাকার এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এটা হত্যা নয় এটা আত্মহত্যা সেটা ঠিক,তবে তাদের (মোর্শেদ)রিবেশ সমাজের সাথে খাপ খায়না।
সাতকানিয়া আশশেফা হাসপাতালে নিহত নিশির সুরতহালের দায়িত্ব পাওয়া এসআই শাহনের বলেন এটা ফাঁস খাওয়ার মত মনে হচ্ছে।
এদিকে সাতকানিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার বলেন এটা প্রাথমিক ভাবে এটা আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। আত্মহত্যা মনে হওয়ার কারণ কী প্রশ্ন করা হলে তখন ওসি প্রিটন সরকার বলেন,সিনডম থেকে বুঝা যায় তবুও পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট আসলে বুঝা যাবে।