শীতের পোশাক: জমে উঠেছে ফুটপাতের বেচাকেনা

বর্ষপঞ্জিতে সবেমাত্র প্রবেশ করেছে পৌষ। কিন্তু এরই মধ্যে প্রকৃতিতের বইতে শুরু করেছে হিমেল হাওয়া।

শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বন্দরনগরীর অভিজাত বিপণিকেন্দ্র থেকে শুরু করে ফুটপাত, সব জায়গায় জমে উঠেছে গরম পোশাকের বেচাকেনা। 

ছেলেদের কোট, ব্লেজার, জ্যাকেট, সোয়েটার, কানটুপি, মাফলার, মেয়েদের কার্ডিগান, শাল, ভারী ওড়না আর শিশুদের রংবেরঙের বাহারি শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে বেশি।

একই সঙ্গে লেপ-তোশক, কম্বলেরও চাহিদা বেড়েছে খুব। 

সামর্থ্যবান পুরুষ, নারী ও তরুণীদের কাছে এখনো কাশ্মিরী আলোয়ান-শালের কদর কিন্তু রয়ে গেছে আগের মতোই। ভারতীয় সামগ্রীর জন্য সুপরিচিত কিছু দোকানে এ শালের চাহিদা আকাশচুম্বি। দামও কিছুটা বাড়তি।

গত কয়েকদিন নগরীর বিপণি বিতান, সানমার ওশান সিটি, আফমি প্লাজা, আমীন সেন্টার, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমিসুপার মার্কেট, ভিআইপি টাওয়ার শপিং মল, আখতারুজ্জামান সেন্টার, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, লাকি প্লাজা, টেরিবাজার, ওয়েস্টকস, আড়ং, বিগবাজারসহ বিপণিকেন্দ্রগুলোতে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নতুন-পুরোনো শীতের পোশাকের জন্য উচ্চমধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে জহুর-হকার্স মার্কেট। বরাবরের মতো এ বছরও আমদানি করা পুরোনো শীতের পোশাকের পাশাপাশি নতুন ডিজাইনের পরিধেয় সামগ্রী মজুদ করেছেন দোকানিরা। তরুণ-তরুণী আর শিশু-কিশোরদের পোশাকই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।

জুবিলি রোড থেকে জহুর হকার্স মার্কেটের রুপা ফ্যাশনের এক বিক্রয়কর্মী মো. রাফি জানান,  মেয়েদের চায়না কার্ডিগান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায়। ছেলেদের চায়না লেদারের জ্যাকেট ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। জিন্স ও মোটা কাপড়ের জ্যাকেটের দাম পড়বে দেড় হাজার টাকা।

জহুর হকার্সের হক ফ্যাশনের আব্দুল হক বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবারের মত এবারও তরুণদের মধ্যে বিভিন্ন ডিজাইন ও মানের ব্লেজারের কদর বেশি। তার দোকানে তৈরি ব্লেজার (১পিস) ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ব্লেজার তৈরির জন্য মজুরি নেওয়া হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা।

অভিজাত বিপণিবিতানেও বইছে (নিউমার্কেট) শীতের পোশাকের গরম হাওয়া। নিচতলার খাকি, হ্যান্ডিবাজার, মনসুন রেইন, মেনজ ক্লাব, শৈল্পিকসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের দোকানগুলোতে এখন ফুলহাতা শার্ট ও জ্যাকেটের দারুণ সংগ্রহ।

হাল ফ্যাশনের পরিধেয় পণ্যের বিশেষায়িত কিছু দোকান আছে রিয়াজউদ্দিন বাজারের তামাকুমণ্ডি লেনে। সেখানেও ভিড় রয়েছে ফ্যাশন সচেতন তরুণদের।

এদিকে, লেপ-তোশকের দোকানে কারিগরেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। যদিও ক্রমেই লেপ-তোশকের জায়গা দখল করে নিচ্ছে আমদানি করা নতুন-পুরনো কম্বল। ওজনে কম, টেকসই ও গরম হওয়ায় দিন দিন চাহিদা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে, নগরীর ফুটপাতে বিকেল হতেই শীতের পোশাকের মেলা বসে। বিশেষ করে নিউমার্কেট, কেসিদে রোড, লালদীঘির পাড়, আন্দরকিল্লা, চকবাজার, বন্দরটিলা, দুই নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ, বায়েজিদ বোস্তামি এলাকার জনাকীর্ণ ফুটপাতে আমদানি করা পুরনো শীতের পোশাকের জমজমাট বিকিকিনি দেখা গেছে। তবে ক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম ফুটপাতের বাজারে ক্রেতারাও কিন্তু দরদামের ব্যাপারে ছিলেন বেশ সচেতন। দরকষাকষির পরই দফা রফা করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.