এটাও সম্ভব! নতুন ঘর পেলেন রণজিৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাত্র ১০ দিনে জীর্ণশীর্ণ কুটিরের জায়গায় তৈরি হয়েছে রঙিন ঘর। হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা গ্রামের হিন্দুপাড়ায় অসহায় রণজিতের ঘর দেখতে ছুটে আসছেন আশপাশের মানুষ। তাদের চোখেমুখে এখন বিস্ময়- এটাও সম্ভব! নতুন ঘর পেয়ে খুব খুশি রণজিৎ।

২৯ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার তাকে নতুন ঘরের প্রতীকী চাবি বুঝিয়ে দেন হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও ) রুহুল আমিন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রণজিৎ দেবের বয়স এখন ৭০ ছুঁই ছুঁই । একসময় সবই ছিল তার। স্ত্রী আর ছেলে-মেয়ে নিয়ে ছিল সাজানো সংসার। স্ত্রী রেখা রানী চৌধুরী সেই দেশ স্বাধীনের আগে মেট্রিক পাস করেছেন। ছেলে বাসু চৌধুরী পল্লী চিকিৎসক হিসেবে আশেপাশের গ্রামে চিকিৎসাসেবা দিতেন। মেয়েকে এসএসসি পাস করার পর বিয়ে দিয়েছিলেন সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে। পেশায় রংমিস্ত্রি রণজিতের ঘরে অন্তত অভাব ছিল না। হঠাৎ এক অজানা ব্যাধিতে রনজিতের ছেলে মেয়ে দুজনই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন, এখন পথে পথে ঘুরে বেড়ান।

ছেলে-মেয়ের এমন পরিণতিতে মুষড়ে পড়েন বৃদ্ধ রণজিৎ। অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকেন ঘরে। তার ষাটোর্ধ্ব বয়সের স্ত্রী মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে অসুস্থ স্বামী ও মানসিক ভারসাম্যহীন দুই সন্তানের মুখে আহার তুলে দিতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বছরের পর বছর মেরামতের অভাবে বৃদ্ধ রণজিতের একমাত্র ঘরটি ভগ্নপ্রায় ও জরাজীর্ণ হয়ে মাটি ছুঁইছুঁই করে কোনোমতে অস্তিত্বে জানান দিচ্ছিল। এ দুরবস্থার খবর স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘর তৈরির উদ্যোগ নেন ইউএনও।

এ প্রসঙ্গে ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, স্থানীয় একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে ঘটনা জানার পর তড়িৎ উদ্যোগ গ্রহণ করি। অসহায় এ পরিবারের জরাজীর্ণ ঘরটি নির্মাণ করে দিতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.