সাতকানিয়া সংবাদদাতা
কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি সাতকানিয়া রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার সময় চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি সাতকানিয়া রেলওয়ে স্টেশন পার হয়ে সাতকানিয়া-বাঁশখালী সড়কের রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে, এ দুর্ঘটনায় নিহত শিশুটির নামপরিচয় এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি।
জানা যায়, কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। একই দিন দুপুর ২ টার দিকে ট্রেনটি সাতকানিয়া রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে। স্টেশন পার হয়ে ট্রেনটি সাতকানিয়া-বাঁশখালী সড়কের রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় শিশুটি ট্রেনের ছাদে দাঁড়ানো অবস্থায় ছিল। এ সময় একটি ডিশের তারের সাথে ধাক্কা লেগে সে চলন্ত ট্রেন থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে উদ্ধার করে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পথিমধ্যে শিশুটিকে বহনকারী এম্বুলেন্সটি পটিয়া উপজেলায় পৌঁছালে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি কেরানিহাট স্টেশন থেকে যাত্রী নিয়ে সাতকানিয়া যাচ্ছিলাম। তখন রেলক্রসিং এর গেটম্যান ট্রেন আসার খবরে যান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। ট্রেনটি রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় হঠাৎ দেখি একটি শিশু তারের সাথে ধাক্কা লেগে ট্রেনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক গৌরী চক্রবর্তী বলেন, ট্রেনের ছাদ থেকে পরে গুরুতর আহত এক শিশুকে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল। শিশুটির শারীরিক অবস্থার সংকটাপন্ন হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শিশুটির দেখভালের জন্য হাসপাতালের এক কর্মচারীকে সাথে পাঠানো হয়েছে।
শিশুটির দেখভালের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে যাওয়া সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচ্ছন্ন কর্মী বশির আহমদ বলেন, শিশুটির কোনো অভিভাবক না থাকায় হাসপাতাল থেকে তার সাথে আমাকে পাঠিয়েছিল। আমাদের বহনকারী এম্বুলেন্সটি পটিয়া উপজেলায় পৌঁছালে শিশুটির মৃত্যু হয়। পরে আমরা শিশুটির মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছি।
সাতকানিয়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মংইউ মারমা় বলেন, কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে একটি শিশু পরে গুরুতর আহত হওয়ার খবরটি গেটম্যান আমাকে জানিয়েছেন। কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে বিরতি দেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। মাঝপথে আর কোনো স্টেশনে বিরতি দেয় না। ধারণা করা হচ্ছে শিশুটি কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে ছাদে উঠেছে। তবে, এখনো পর্যন্ত শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।