মিনি হাসপাতালের নামে সাতকানিয়ার মানুষের সাথে প্রতারণা,সহ্য করলেননা ইউএনও 

ইউএনও খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বন্ধ করে দিলেন সেই মিনি হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

চিকিৎসা সেবার নামে বছরের পর বছর ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও ভয়ংকর অপ-চিকিৎসা চালিয়ে আসছিলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার পল্লী চিকিৎসক মো. এহসান হাবীব। গত আগস্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়ে জরিমানা ও মুচলেকা দেওয়ার পরও তিনি থামেননি। বরং আরও বেপরোয়া হয়ে চিকিৎসা বাণিজ্য চালাতে থাকেন।

অবশেষে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) উপজেলা প্রশাসন আবারও অভিযান পরিচালনা করে ‘আন-নুর সেবা সেন্টার’ নামে পরিচিত অবৈধ মিনি হাসপাতালটি সিলগালা করে দিয়েছে। তবে অভিযানের সময় এহসান হাবীবকে পাওয়া যায়নি।

এই সিলগালা অভিযানটি পরিচালনা করেন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মাহমুদুল হাসান।

ইউএনও খোন্দকার মাহমুদুল জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থানীয়দের অভিযোগ পাচ্ছিলেন যে, পল্লী চিকিৎসক এহসান হাবীব গত আগস্টে মুচলেকা দেওয়ার পরও নতুনভাবে রোগী ভর্তি রাখছেন, অনুমোদনহীন ইনজেকশন দিচ্ছেন, এবং জটিল রোগের চিকিৎসা করছেন।

তিনি বলেন, গত আগস্টের ঘটনায় মুচলেকা দেওয়ার পর এভাবে আবার হাসপাতাল চালানো আইনবহির্ভূত। তাই যথাযথ প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়েছে।

জানা যায়, ডিএমএফ অ্যান্ড বিএইচএস ডিগ্রিধারী পল্লী চিকিৎসক হয়েও চেম্বারের রীতিমতো মিনি হাসপাতাল খুলে বসেছেন মো. এহসান হাবীব। একজন পল্লী চিকিৎসক হয়েও উচ্চতর ডিগ্রিধারী ডাক্তারের বেশ ধরে জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করছেন এই চিকিৎসক। এ ছাড়াও তিনি চেম্বারে মিনি হাসপাতাল খুলে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি ১০টি শয্যা স্থাপন করে রোগী ভর্তি রাখেন। এতে একদিকে চিকিৎসার নামে তিনি গ্রামের সাধারণ রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। আর অপরদিকে চিকিৎসা নিতে এসে ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন সেবা গ্রহীতারা।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই সাতকানিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঠাকুর দিঘীর পাড়ের মসজিদ মার্কেটে ১০টি শয্যা স্থাপন করে আন-নুর সেবা সেন্টার নামে একটি চেম্বার খুলে দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখছেন মো. এহসান হাবীব। অথচ তিনি শুধু পল্লী চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চিকিৎসার নামে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এমবিবিএস ডাক্তার না হলেও ঠিকই ডাক্তার পদবি ব্যবহার করছেন পল্লী চিকিৎসক মো. এহসান হাবীব।

অপরদিকে তিনি তার প্রেসক্রিপশন প্যাডে ডি.এম.এফ অ্যান্ড বি.এইচ.এস ডিগ্রির পাশাপাশি এম.সি.এইচ (ঢাকা শিশু হাসপাতাল), এক্স.পি.টি (কুমিল্লা সদর হাসপাতাল) ও কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট আধুনিক হাসপাতালের প্রাক্তন সহকারী মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। এ ছাড়াও প্রেসক্রিপশন প্যাডে তিনি মেডিসিন, মানসিক, বাত-ব্যথা, মা ও শিশু, হাঁপানি, ডায়াবেটিস, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগে অভিজ্ঞ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

অন্যদিকে তিনি কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট আধুনিক হাসপাতালের প্রাক্তন সহকারী মেডিকেল অফিসার হিসেবে আগে কর্মরত ছিলেন দাবি করে প্রেসক্রিপশন প্যাডে উল্লেখ করলেও বর্তমানে কুমিল্লা জেলায় ওই নামে কোনো হাসপাতাল নেই।

 

 

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.