সাতকানিয়া প্রতিনিধি:
সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের কারণে অতিষ্ঠ জনগণ। তারা মাদক ব্যবসা, চোরাচালান, চুরি ডাকাতিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হলেও নীরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। প্রশাসন বলছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার ছদাহা, কেঁওচিয়া, আমিলাইশ, কালিয়াইশ, ধর্মপুর, বাজালিয়া, পুরানগড়, ঢেমশাসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় প্রায় ২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক বসবাস করে আসছে। আর তাদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাদের কারণেই হুমকিতে আছে পুরো সাতকানিয়াবাসী। ওইসব রোহিঙ্গারা দিনের বেলায় লোক দেখানো অল্প বেতনে কাজ করলেও রাতের অন্ধকারে তারা তাদের অপর্কমগুলো চালিয়ে যাচ্ছে ।
ছদাহা ও কেঁওচিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা হরিণতোয়া কিছুটা দুর্গম হওয়াতে প্রশাসনের নজরে পড়ে না। ওই এলাকায় কালভাদ্রেও পুলিশ যায় না। গাড়ি চলাচলে অসুবিধা ও হাঙ্গর খালে ব্রিজ না থাকায় এলাকাটিতে যাওয়া খুব দুষ্কর। তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, পুলিশ কেউ ওই এলাকায় সহজে যেতে চান না।
এছাড়াও বেশ কিছুদিন ধরে চুরি, ডাকাতি, খুনের ঘটনার পেছনে রোহিঙ্গারা জড়িত রয়েছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ডাকাতের হাতে নিহত হন সাতকানিয়ার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম ওরফে মিয়া নামের একব্যক্তি। গত কয়েকদিন আগে লোহাগাড়াতে রোহিঙ্গাদের হাতে ১৮ হাজার টাকার জন্য খুন হন জাতীয় পার্টির নেতা আনোয়ার হোসেন।
ছদাহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাদ হোসাইন চৌধুরীর বাড়ি সামনে মাছের ঘেরের টাকা লুটের ঘটনায় রোহিঙ্গা নাগরিক দিল মোহাম্মদ গত ৩১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এ সময় সে নিজে বাঁচতে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলামের নাম জবানবন্দিতে উল্লেখ করে বলেও অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
সচেতনমহল সূত্রে জানা যায়, কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও খারাপ লোকদের সহযোগিতায় রোহিঙ্গারা এই ধরণের অপকর্ম করছে। সাম্প্রতিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে আসছে সাতকানিয়া, লোহাগাড়াসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায়।
এ বিষয় নিয়ে সাতকানিয়া উপজেলার ভাইস-চেয়াম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বর্তমান সময়ে সাতকানিয়াতে কিছু কিছু স্থানে রোহিঙ্গারা বাস করছে, তা আমি শুনেছি। এমনকি অনেক রোহিঙ্গা জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বসাবাস করছে। বিষয়টি আমি উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা করব।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম চৌধুরী বলেন, আগামী আইন-শৃঙ্খলা কমিটি সভায় এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলেও আমরা ব্যবস্থা নিবো।