টিকা কর্মসূচি সফল করতে সবাইকে আহ্বান রাষ্ট্রপতির

 করোনা ভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে সরকারের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে করোনার অমানিশার আঁধার দ্রুতই কেটে যাবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বুধবার (২১ জুলাই) বঙ্গভবন থেকে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বার্তায় এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গভবনে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাষ্ট্রপতি পরিবারের সদস্য ও বঙ্গভবনের অতিপ্রয়োজনীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ঈদের নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এ বার্তা দেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির কারণে টিকাদান কর্মসূচি সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হলেও বর্তমানে তা পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সব নাগরিকের জন্য টিকা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। তাই এ কর্মসূচিকে সফল করতে সরকারের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

তিনি বলেন, করোনা এমন একটি ভাইরাস যা থেকে ইচ্ছে করলেই কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা এককভাবে একটি দেশের পক্ষে নিরাপদ থাকা সম্ভব নয়। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আজ আমরা গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা। তাই বিশ্বকে করোনার হাত থেকে বাঁচাতে হলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে বহুজাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে ৷ রাতের আঁধার শেষেই ঝলমলে রোদের আলোতে ভরে উঠে বিশ্ব। করোনার অমানিশার আঁধারও দ্রুতই কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ। নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাবে আমাদের দেশ। কিন্তু এর জন্য দরকার সবাইকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। অর্থাৎ সঠিকভাবে মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা ও শারীরি দূরত্ব মেনে চলা।

সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। এ ঈদ উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভু প্রেমের পরাকাষ্ঠা। কোরবানি আমাদের মধ্যে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেওয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়। এবার মুসলিম বিশ্ব এমন একটা সময়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করছে, যখন করোনার ভয়াল থাবায় গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত। বাংলাদেশেও করোনার নেতিবাচক প্রভাব ক্রমান্বয়ে প্রকট হচ্ছে। করোনার কারণে দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকা আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জীবন বাঁচানো প্রথম অগ্রাধিকার হলেও জীবন বাঁচিয়ে রাখতে জীবিকার গুরুত্বও অনস্বীকার্য।

তিনি বলেন, সরকার করোনা মোকাবিলা ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন প্যাকেজ প্রণোদনা দেওয়াসহ বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। অসচ্ছল ও নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবেও বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। কৃষি ও শিল্পসহ উৎপাদনশীল প্রতিটি খাতের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও সরকার সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবাই সরকার নির্ধারিত স্থানে কোরবানি সম্পন্ন করবেন এবং যথাসময়ে বর্জ্য অপসারণে সচেষ্ট থাকবেন। আমি দেশের আপামর জনগণের প্রতি কোরবানির মর্মার্থ অনুধাবন করে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। ত্যাগের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত হলেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি ও সৌহার্দ্য। প্রতি বছর রাষ্ট্রপতি বঙ্গবভবনে সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেও করোনা ভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণের কারণে গত বছরের মতো এবারও ঈদে বঙ্গভবনের সবধরনের আনুষ্ঠানিকতা বাদ দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.