কাঁচাবাজারের দখলে বাঁশখালী প্রধান সড়ক , প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা!

 

মু. মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :

চট্টগ্রাম শহরের সাথে বাঁশখালীর যোগাযোগের একমাত্র বিকল্প রোড় ৬৫ কিলোমিটারের ব্যস্ততম বাঁশখালী পিএবি প্রধান সড়ক। তার দুই পাশের ফুটপাতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকানপাট ও কাঁচাবাজারের দখলে থাকায় নিত্য যানযটের অসহনীয় যন্ত্রণায় ভুগছে সাধারণ পথচারীরা।
গুণাগরী ,বৈলছড়ী কেবি বাজার, শীলকূপ টাইমবাজার ও চাম্বল সহ পুরো প্রধান সড়কের ফুটপাত কাঁচাবাজারের দখলে। এতে সড়ক পথেই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণকে। যথা সময়ে চাকুরীজীবিরা পৌঁছাতে পারছে না তাদের কর্মস্থলে। এমনকি এ কারণে স্বাচ্ছন্দে চলাচল করতে পারছেন না পথচারীরা। ঘটছে যান চলাচলে ব্যাঘাত, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে থাকে জট।

পুরো বাঁশখালীর প্রায় প্রধান সড়কে গড়ে উঠা কাঁচাবাজার গুলো ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে শাকসবজি, ফলমূল, তরিতরকারি ও মাছের দোকান বসিয়ে দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে। যা দেখার কেউ নেই। ফুটপাত দখল করে অনেক দোকান বসছেন স্থায়ীভাবেই। আর যারা ফুটপাতে জায়গা পাচ্ছেন না, তারা মালামাল নিয়ে বসে পড়েছেন রাস্তার উপরই। এমনকি রাস্তার উপরে রাখা আছে ফলের ঝুড়ি, সবজির বস্তা প্রভৃতি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের চলতে হচ্ছে মূল সড়কে নেমে।

বাঁশখালী প্রধান সড়কে চলাচলকারী যাত্রীবাহী এস.আলম বাস সার্ভিস, সানলাইন সহ চট্টগ্রাম শহর থেকে আসা কার্গো সার্ভিস সহ বড় বড় ট্রাকগুলো একটা আরেকটাকে ক্রস করে যেতেও হিমশিম খায়। ফুটপাত দখল করার কারণে দিন দিন সরু হয়ে যাচ্ছে বাঁশখালী-চট্টগ্রামের সাথে যোগাযোগের একমাত্র বিকল্প বাঁশখালীর প্রধান সড়কটি। তাছাড়া বে-আইনিভাবে প্রধান সড়কে থমকে দাঁড়িয়ে আছে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি। প্রশাসনের নজরে দৃষ্টিগোচর করার পরেও সরছে না খুঁটিগুলো। সড়ক দখল করেই সিএনজি-অটোরিকশার পার্কিংও দেখার কেউ নাই।

বাঁশখালী হাসপাতালের এ্যামুলেন্স চালক মো. আলমগীর বলেন, ‘বাঁশখালীর প্রধান সড়কে র্বতমানে যে হারে যানজট লেগে থাকে, তাতে সাধারণ রোগী নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একেক যানজটে ঘণ্টা পার হয়ে যায়। অনেক সময় ডেলিভারী সহ মুমূর্ষু রোগী নিয়ে কঠিন পরিস্তিতির মুখোমুখি হতে হয়। যার কারণে তীব্র যানজটে অতিষ্ট হয়ে পড়ে রোগীরা। যেই হারে গাড়ি বেড়েছে, সেই তুলনায় আমাদের বাঁশখালী সড়কটি ছোট,২ টি এস আলম সার্ভিস একসাথে ক্রস করতে পারে না। যার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তাটি আরো বড় করা উচিত। ’

জলদী এলাকার মো. আব্দুল কাইয়ুম মিয়াজি বলেন, ‘রাস্তা দখল করে কাঁচাবাজার বসার কারণে সড়ক জুড়ে দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের মতো সাধারণ জনগণ ও চট্টগ্রাাম শহরগামী সাধারণ মানুষ সহ চাকরিজীবীদের। ’
রাস্তা দখল করে কাঁচাবাজার এটা কোন দেশের আইন আমাদের বুঝে আসে না। কেউ কিছু বলেও না। রাস্তা হয়েছে গাড়ি চলানোর জন্য কিন্তু তারা কাঁচাবাজার ও দোকানপাট বসিয়ে অবৈধভাবে ফুটপাত গিলে খেয়েছে। এরকম যানজটের কারণে আমরা বাঁচি না বলে জানান এস.আলম, সানলাইন, স্পেশাল, সুপার সার্ভিস ও সিএনজি অটোরিকশার বেশ কয়েকজন চালক।

চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজিবী এডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন তালুকদার বলেন, ‘এই পথেই আমাদের নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে ফুটপাতের পুরো অংশেই বাজার বসে গেছে। চট্টগ্রাম শহর থেকে বাঁশখালীতে পৌঁছতে দেড়-দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে অনেক সময় তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। দীর্ঘ জ্যামে আটকা পড়ে যায় যানবাহনগুলো। হেঁটে চলাচলের আর কোনো উপায় নেই। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও সওজ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি থাকলে এরকম জনদুভোগের কিছুটা লাগব হতো।’

 

 

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.