ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ

সোমবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টা থেকে ভোর পর্যন্ত হলের ২১৩ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সামির সাদিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত সামির বামপন্থি ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি ইতোমধ্যে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সরকারবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই পদধারী নেতার বিরুদ্ধে। মাঝরাতে ওই শিক্ষার্থীর বাবাকে ফোন করে হলে আসতে বাধ্য করার অভিযোগও উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন— হল শাখা ছাত্রলীগের সদ্য গঠিত কমিটির সহ-সভাপতি আহম্মদ উল্লাহ এবং পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক রিজভী। এরা দুজনই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আযহারুল ইসলাম মামুনের অনুসারী।

ভুক্তভোগী সামির সাদিক বলেন, ‘আমি প্রথম বর্ষ থেকেই হলে থাকি। আমি ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত। তবে এ বিষয়টি ছাত্রলীগের নেতারা জানতেন না। গতকাল হঠাৎ তারা আমার কাছে ছাত্র ফেডারেশনের কিছু বই দেখতে পায়। এ ছাড়া কম্পারেটিভ রিলিজিয়ন নিয়েও কিছু বই আমার টেবিলে তারা পায়। পরে আমার রুমমেট আহম্মদ উল্লাহ ও রিজভী আমাকে রাত ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা আমার ফোন ও ফেসবুক আইডি চেক করেন। বিভিন্ন বাম সংগঠনের পেইজে লাইক দেওয়া দেখে তারা আমাকে জেরা করতে থাকেন। এ সময়ে আমার বাবাকে ফোন করে ক্যাম্পাসে এসে আমাকে নিয়ে যেতে বলেন।’

সামির বলেন, ‘মাঝরাতে বাবা-মা আমার এ অবস্থার খবর শুনে সারারাত ঘুমাতে পারেননি। তারা ভোরে বগুড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়ে সকালে ক্যাম্পাসে পৌঁছান। আমার এ অবস্থার কথা শুনে মা কেঁদে দেন। মায়ের কান্না দেখে আমিও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী আহম্মদ উল্লাহ ঘটনার সঙ্গে নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। তার বাবাকে আমি ফোন দিইনি। রুমের অন্যকেউ দিয়ে থাকতে পারেন।’ আহম্মদ উল্লাহর দাবি, ছাত্রলীগ করেন বলে তাদের নাম জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্য আরেক অভিযুক্ত রিজভীকে ফোন করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আযহারুল ইসলাম মামুন বলেন, ‘এখানে ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তার রুমমেটরা তাকে শুধু জিজ্ঞেস করেছিল। তাছাড়া তার বাবাকে যে ফোন দিয়েছে, সে তো ছাত্রলীগের কেউ না। তার এলাকারই বড় ভাই।’

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বিল্লাল হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.