টেকনাফে স্কুলছাত্রী অপহরণকারীরা অধরা, শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

টেকনাফ প্রতিনিধি : কক্সবাজারের টেকনাফে স্কুলছাত্রী ও এসএসসি পরীক্ষার্থী তাসফিয়া আলম (১৫) অপহরণকারীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সহপাঠী স্কুল শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষক এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী তাসফিয়া আলম গত ২৬ অক্টোবর বিকালে নির্বাচনী পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কামরুল ইসলাম ওরফে আব্বুইয়া নামে এক যুবক তাকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নেয়। পরে সহপাঠীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাসফিয়ার বাবা সরকারি জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জায়েদ হাসানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এসময় আব্বুইয়া ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে তাসফিয়ার বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে আব্বুইয়াকে প্রধান আসামি করে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হোয়াইক্যং খারাংখালী মহেশখালীয়া পাড়ার মমতাজ মিয়ার ছেলে কামরুল ইসলাম ওরফে আব্বুইয়া এলাকার চিহ্নিত একজন মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী। তিনি অস্ত্র, মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন সহ চারটি মামলার পলাতক আসামী। স্কুল ছাত্রী তাসফিয়ার বাবা শাহ আলম জানান, গত ২৬ অক্টোবর আমার মেয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে রিক্সা থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে একটি কার গাড়িতে তুলে নেয়। পরে পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করেন এবং আমি আব্বুইয়াসহ তার সহযোগিদের আসামি করে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করি। মামলার পর সে আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এমনকি মামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে সে গত ১ নভেম্বর দিবাগত রাতে আমার একটি বাগানের প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে ফেলে। সে নিজেকে র‌্যাবের সোর্স পরিচয় দেয়। কোমরে সবসময় অস্ত্র বহন করে। যে তার বিরুদ্ধে কথা বলে তাকে নানা ধরনের হুমকি ধমকি দেয়। পুরো এলাকায় সে এখন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। এদিকে মানববন্ধনে তাসফিয়ার সহপাঠীরা দাবি করেছেন, ২৬ অক্টোবর ঘটনার পর থেকে তাসফিয়া ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নিরাপত্তাভাবে তাসফিয়ার পড়ালেখা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। তাসফিয়ার অপহরনকারী আব্বুইয়া ও তার সহযোগীরা এলাকায় এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে সমাজে এসব অপরাধ দিনদিন বাড়বে। তাসফিয়ার স্কুল নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুপম কান্তি বড়ুয়া বলেন, ঘটনার পর থেকে তাসফিয়ার স্কুলে আসা বন্ধ রয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাহীনতার কথা বলছেন। আমরা চাই এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি হোক, তাসফিয়ার স্কুলে ফেরার পথ সুগম হোক।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.