মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে চোরাই গরু, কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

 

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে বাংলাদেশে মিয়ানমারের গরু প্রবেশ আবারও বেড়েছে। বছরখানেক ধরে সীমান্ত দিয়ে অবাধে প্রবেশ করছে চোরাই গরু। এর মধ্যে কিছুদিন কমলেও সম্প্রতি আবার গরু চোরা চালান বেড়েছে। বর্তমানেও বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রবেশ করছে চোরাই গরু।
চোরাই পথে এসব গরুর অধিকাংশই বিক্রি হচ্ছে গর্জনিয়া বাজারে। এতে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ফুলতলি, ভালুক্কায়া, বাইশারী, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, আশারতলী, জামছড়ি, বম্বনিয়া এবং রামু উপজেলার হাজিরপাড়া, মৌলভীরকাটার বেশ কিছু চোরাকারবারিরা স্থানীয় প্রভাবশালী ছত্রছায়ায় অবাধে আনছে চোরাই গরু।
মিয়ানমারের বিজিপি, আবার কোথাও আরাকান আর্মি, এবং আরসার সদস্যদের সঙ্গে আতাঁত করে সীমান্তের চোরাই পথে দিয়ে এসব গরু আনছে চোরাকারবারি। বিজিবি টহল থাকলেও দুর্গম পথ দিয়ে গরু প্রবেশ করছে।
স্থানীয় খামারীরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে এসব এলাকা থেকে অন্তত দেড় হাজার গরু প্রবেশ করেছে। প্রতিরাতে দুইশ থেকে পাঁচশ পর্যন্ত গরু এনে গর্জনিয়া বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। মিয়ানমারের ওপারে আরসার নাম ভাঙ্গিয়ে কিছু যুবক অর্থের লেনদেন করে গরুগুলো এপারে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। চক্রটি গরু ছাড়াও, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা, বিদেশী মদ, সিগারেট এবং কফি ও ক্যালসিয়ামও নিয়ে আসে।
অভিযোগ রয়েছে, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ইসমাইল মোঃ নোমান, কচ্ছপিয়ার মুহাম্মদ নুরুল আজিম, নজরুল ইসলাম, মোঃ রাসেল, শওকত আলী, তৌহিদুল ইসলাম, মোস্তাক সওদাগর, মোঃ আলম, শাহজাহান সিরাজ শাকিল, জসিম উদ্দিন, নাছির উদ্দীন সোহেল, মোঃ আলী, আবু ঈসা, জামশেদ আলম, আসাদুজ্জামান রিপন, জহির উদ্দিন, আবুল কালাম, মুহাম্মদ নুর, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মৌলভী নজির, নুরুল আমিন, কামাল, জসিম উদ্দিন, মোঃ শাহ আলম, মোঃ সেলিম, মোঃ আবদুল্লাহ, বালুভাসার জসিম উদ্দিন মেম্বার ও আরো অনেকে সীমান্ত ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত গরু আনছে।
প্রত্যেক গরুর জন্য ৮-১০ হাজার টাকা করে বিভিন্ন খাতে ম্যানেজ করা হয় বলে জানা গেছে।
এভাবে অবাধে চোরাই পথে মিয়ানমারের গরু প্রবেশ করায় দেশীয় গরুর চাহিদা ও দাম কমে গেছে। তবে চোরাই কারবারীদের ভয়ে খামারীরা মুখ খুলছে না।

এই বিষয়ে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ইসমাইল মোঃ নোমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে বক্তব্য দিতে রাজি হননি তিনি। তবে তিনি বলেছেন, মায়ানমার থেকে চোরাই পথে গরু আসে এটা সবাই জানে। আমার নিজেরও খামার আছে, কিন্তু আমি লাভবান। আমার কোনো ধরণের ক্ষতি হচ্ছে না।

রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক গর্জনিয়ায় মতবিনিময় সভা করে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। যারা মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে গরু আনছে তাদের গোপনভাবে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

গরু চোরা চালানের কারণে চোরাকারবারি দ্বারা রাষ্ট্রের কোন ক্ষতি হচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সচেতন লোকজন।

 

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.