পটিয়ায় প্রতিপক্ষের  গাছপালা কেটে লুটপাট

 

 

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :

 

চট্টগ্রামের পটিয়ায় সাবেক এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহচর ১০-১৫ টি মামলার আসামি সন্ত্রাসী নুরুল আবছারের (৩৯) নেতৃত্বে ৭-৮ জনের একটি সন্ত্রাসী দল প্রতিপক্ষের নিজস্ব জায়গার উপর রোপণকৃত বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা জোরপূর্বক কেটে লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পটিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) উপজেলার  শোভনদন্ডী ইউনিয়নের কাজীর মসজিদ সংলগ্ন হাতিয়ারঘোনা মৌজায়
বিএনপি নেতা বাহাদুর ইসলাম খান গং ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য নাসির উদ্দীন চৌধুরী গংয়ের পারিবারিক মালিকানার জায়গার উপর রোপিত পুরাতন গাছপালা কেটে লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এসময় আবছারের সাথে হিলচিয়া গ্রামের মৃত সাহাব মিয়ার ছেলে হাফেজ আহমদ সহ ৭-৮ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল।

 

নুরুল আবছার হিলচিয়া হাতিয়ারঘোনা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, চুরি, গুলি, অগ্নিসংযোগ,দান বাক্সের টাকা চুরি সহ একাধিক ঘটনার মূল হোতা।  গত বছরের ৯ আগস্ট তার নেতৃত্বে হিলচিয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের উপর নির্বিচারে গুলি করে ১০-১২ জন নিরহ লোককে আহত করা হয়।

কিশোর গ্যাং লিডার  আবছারের নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একটি দল গত বছরের ২ জুন মো. সাকিব নামে একজনকে গুলি করে গুরুতর আহত করা হয়। এই ঘটনায়ও হাতিয়ারঘোনা গ্রামের মৃত ফারুক আহমদ খানের ছেলে বাহাদুর ইসলাম খান (৪০) বাদী হয়ে নুরুল আবছার কে ১ নং আসামি করে মোট আট জনের  বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

 

 

গত বছরের এপ্রিল মাসে হিলচিয়া গ্রামের জফিকুল ইসলাম নামে একজনকেও একই ভাবে সন্ত্রাসী আবছারের নেতৃত্বে গুলি করে আহত করে। ঐ ঘটনায় সন্ত্রাসী আবছার প্রায় আড়াই মাস জেল হাজতে ছিল।

 

স্থানীয় ও একাধিক লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নুরুল আবছারের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ কিশোর গ্যাং চক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাদের নেতৃত্বে এলাকায় প্রতিনিয়ত মারামারি হানাহানি লেগে আছে। বিভিন্ন অলিগলিতে এদের দেখা মিলছে। তারা দিন রাত নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং,মদ,গাঁজা ও ইয়াবা সেবন এবং বিকিকিনি সহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত। সুযোগ বুঝে সিএনজি গাড়ি থামিয়ে  যাত্রী ও পথচারীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া। রাতের বেলা সারা রাত জেগে থেকে মানুষের গরু,ছাগল, হাঁস, মুরগী, কবুতর, কলা,পেপে ইত্যাদি গাছের ফল ফলাদি ও পুকুর থেকে মাছ চুরি করা, মানুষের গাছগাছালি কেটে নিয়ে যাওয়া তাদের পেশা ও নেশা।

 

কখনো স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। বেবি আকতার এ্যানি নামের একজন স্কুল ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা কালে বাধা দেওয়ায় মা সহ ঐ ছাত্রীকে কুপিয়ে আহত করে এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। তারা কখনো এলাকায় জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধে টাকার বিনিময়ে কোনো এক পক্ষের হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান নেয়। এ সবই এই কিশোর গ্যাংয়ের নিয়মিত কর্মকাণ্ড।
তাদের হাতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ লাঞ্চিত হচ্ছে।

গত বছরের ১০ এপ্রিল মামলার স্বাক্ষী আমির হোসেন, ২০ এপ্রিল রিক্সা চালক মো. জামাল ও তার স্ত্রী, ৫ মে আবু নাসের শিমুল সহ ৩ জন, ২৩ মে খোরশেদ সহ ৮ জন,২৬ মে ইমরান,২৭ মে নজির আহমদ, ৬ জুন সিএনজি চালক আবু তালেবকে কিশোর গ্যাং লিডার আবছারের নেতৃত্বে ধাওয়া করলে ভয়ে হ্রদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করে। ১২ জুন হাতিয়ারঘোনা গ্রামের আবদুল মুবিনের পিকআপ ভাংচুর করে। ২২ জুন আদালতে তাদের দলের ৫ সদস্য আটক হলে পরের দিন
২৩ জুন ক্ষিপ্ত হয়ে হিলচিয়া গ্রামের ইদ্রিচ আলী, তার স্ত্রী বোন সহ ৪ জনের উপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। তাদের বাড়ি ঘর থেকে বের করে দিয়ে ভাংচুর ও মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।

 

স্থানীয় বিএনপি নেতা ও মামলার বাদী বাহাদুর ইসলাম খান জানান,সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহচর আওয়ামী লীগ নেতা সন্ত্রাসী আবছারকে  গ্রেফতার হয়েছে শুনে এলাকার মানুষ আনন্দিত হয়েছে। সে গত ১৫ বছর হিলচিয়া হাতিয়ারঘোনা গ্রামের মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। বহু মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। আমিসহ এলাকাবাসীকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুরের নামে মিথ্যা রাস্ট্রদ্রোহী মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। তার দলের আরও ৮-১০ জনকে গ্রেফতার করার পর এলাকায় শান্তি আসবে। না হয় যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনেদুপুরে আবছারের নেতৃত্বে হাফেজ আহমদ সহ একদল সন্ত্রাসী কাজীর মসজিদের দুই পাশে আমাদের ও নাসির গংদের
গাছপালা কেটে লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পটিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.