আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হলে ধারদেনা করেই প্রাথমিক বিপদ কাটানোর চেষ্টা করেন অনেকে। আবার অনেকে দেখা যায়, সন্তানের পড়াশোনা, বাড়ি করা, চিকিৎসা এমনকি প্রতিদিন খাওয়ার জন্যও ধারদেনা করতে বাধ্য হন। এবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের ৫২ শতাংশ পরিবার কোনো না কোনো প্রয়োজনে ঋণ নিয়েছেন।
৮ হাজারেরও বেশি পরিবারের ওপর জরিপ চালিয়ে পাওয়া তথ্য থেকে পিপিআরসি বলছে, সাংসারিক খরচ বহন করতে এখন বেশিরভাগ মানুষ ঋণ নিচ্ছে।
গবেষণায় জানা গেছে কোন কোন প্রয়োজনে বাংলাদেশের মানুষ বেশি ঋণ নিয়ে থাকে। এর মধ্যে তালিকার শীর্ষে রয়েছে যেগুলো—
১. সাংসারিক খরচ
পিপিআরসি বলছে, দেশের মানুষ সংসারের দৈনন্দিন খরচ চালাতে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়ে থাকেন। অর্থাৎ মানুষের মাথাপিছু যে আয় তা দিয়ে সংসারের দৈনন্দিন খরচ চালাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে বিধায় মানুষ ঋণ করতে বাধ্য হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার জন্য আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের ওপর নির্ভর করছেন। পিপিআরসির জরিপে দেখা গেছে, মোট ঋণগ্রহীতা পরিবারের প্রায় ২৯ শতাংশই সাংসারিক খরচ বহনের জন্য ঋণ নিয়েছে।
২. চিকিৎসার প্রয়োজনে
পিপিআরসি বলছে, দেশে ধারদেনা করে জীবন চালানো মানুষের মধ্যে মোট ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ পরিবার চিকিৎসার প্রয়োজনে ঋণ নিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য বেশি অর্থের দরকার হলেই ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয় তাদের।
৩. বাসস্থানে খরচ
পিপিআরসির গবেষণায় দেখা গেছে, বাড়ি নির্মাণ বা মেরামত করতে ঋণগ্রস্ত পরিবারের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ পরিবার ঋণ নিয়ে থাকে।
৪. বাকিতে সদাই নেওয়া
দৈনন্দিন প্রয়োজনের অনেক জিনিসই এলাকার বাজার বা দোকান থেকে বাকিতে এনে থাকেন অনেকেই। নিম্ন থেকে মধ্য আয়ের মানুষের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি। নিত্যপণ্যের এই ঋণ নেওয়ার মাত্রা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। পিপিআরসি বলছে, গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জরিপে অংশ নেওয়া ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ পরিবার দোকান থেকে বাকিতে পণ্য এনে সংসার চালায়।
৫. বিনিয়োগ
পিপিআরসি বলছে, ব্যবসা বা বিনিয়োগের জন্য অনেক পরিবার ঋণ নিয়ে থাকে। নিম্ন আয় থেকে ধনী সব ধরনের পরিবারই এ খাতে ঋণ নিয়ে থাকে। ঋণ নেওয়া পরিবারগুলোর মধ্যে ৮ দশমিক ৯৬ পরিবার ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে ঋণ নিয়েছে।
পিপিআরসির গবেষণায় উঠে এসেছে, এই পাঁচটি প্রয়োজনের বাইরেও আরও কিছু খাতে দেশের মানুষ ঋণ নিয়ে থাকে। সেগুলো হলো—আগে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে নতুন করে ঋণ নেওয়া, শিক্ষা খরচ, বিদেশে যাওয়ার খরচ, অস্থাবর সম্পত্তি কেনা, কৃষি খরচ, কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া, বাড়ি ভাড়া মেটানো, যৌতুক দেওয়া, মুঠোফোন কেনা, চাকরির জন্য, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি বিল, চাঁদা দিতে।