আনোয়ারায় জমি অধিগ্রহণের টাকা নিয়ে চোরের উপর বাটপারি, জেলে গেল ইউপি সদস্য

 

আনোয়ারা প্রতিনিধি

ঘটনাটি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার। চায়না ইকোনোমিক জোনের জন্য সরকার স্থানীয়দের বেশ কিছু জমি অধিগ্রহণ করে। আর ভূমি অধিগ্রহণের টাকা তুলে দেওয়ার নামে এক পরিবারের সকল সম্পত্তিই ছলেবলে নিয়ে নিয়েছে জামাল নামে এক ব্যক্তি। আর জামালের কাছ থেকে এসব সম্পত্তি উদ্ধারের নামে তিন লাখ টাকা নেউ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সাদ্দাম। পথের ফকির হয়ে তারা দ্বারস্থ হন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে। চেয়ারম্যান জামাল ও ইউপি সদস্য সাদ্দামকে তলব করলেও দাপুটে এই দুই ‘বাটপার’ আসেনি চেয়ারম্যানের দরবারে। ভুক্তভোগীরা তাই দ্বারস্থ হয়েছেন আদালতে। আদালত অভিযোগ পেয়ে তা তদন্তের জন্য দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশ (পিবিআই)। তদন্তে উঠে আসে অভিযোগের সত্যতা৷ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমাও দেয় সংস্থাটি।

এরপর এ মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন চায় আসামী সাদ্দাম। আদালত তাকে পাঠায় কারাগারে। চট্টগ্রামের আনোয়ারার উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের মুহাম্মদপুর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেনের।

এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কায়সার জানান, পিবিআইয়ের রিপোর্টে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে। আদালতে সোমবার (১৮ জানুয়ারী) তিনি আত্মসমর্পণ করেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট -১ এর আদালতে। আদালত শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

মামলার বাদী আবদুল হাকিমের পুত্র মোহাম্মদ হানিফ এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সংবাদকে বলেন, ‘স্থানীয় মোহাম্মদ জামাল আমার বৃদ্ধ বাবার নামে আসা চায়না ইকোনোমিক জোনের জমি অধিগ্রহণের টাকা তুলে দেওয়ার নাম করে প্রথম পাওয়ার নেন। পাওয়ার দিয়ে টাকা তুলতে পারছেন না বলে জানিয়ে করে পেলেন জমি রেজিষ্ট্রি। টাকাগুলো তুলে দেওয়ার জন্য আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় আনোয়ারা রেজিষ্ট্রি অফিসে। এরপর আমরা জানতে পারি আমাদের জমি, বসতঘর সবি জালিয়াতি করে নিজের নামে করে ফেলেছেন তিনি। পরবর্তীতে জামাল তার পিতার নামে করে নেন এসব জমি। এরপর করে ফেলেন দখলও। আমরা যখন বলি আমাদের জমি ফেরত দিতে, তখন সে জানায় আমরা নাকি তাদের কাছে ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে জমি বিক্রি করেছি। তখন আমাদের ইউপি মেম্বার সাদ্দাম হোসেন এটি সমাধান করে দিবেন বলে ৩ লক্ষ টাকা নেন আমাদের কাছ থেকে। তারপরও কোনো সমাধান না পেয়ে, আমরা আর কোনো উপায় না দেখে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যানের এখানে একাধিকবার বৈঠকেও ডাকা হয় তাদের। কিন্তু একবারও আসেনি কেউ। চেয়ারম্যান সাহেব সুবিচারের উদ্দ্যেশে আমাদেরকে একটি লিখিত কাগজ দেন। আমরা এটি নিয়ে মাননীয় আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। মামলাটি পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে আদালতে প্রেরণ করেন। আমরা এখন পথের ফকিরের মতো হয়ে গেছি।’

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.