আমিন বাজারে ৬ ছাত্র হত্যা মামলার রায় ২ ডিসেম্বর

সাভারের আমিন বাজারে শবে বরাতের রাতে ছয় কলেজছাত্রকে ডাকাত সাজিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

সোমবার (২২ নভেম্বর) রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান এই রায়ের তারিখ ঠিক করেন। একইসঙ্গে ৪৮ আসামির জামিন বাতিলের আদেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।জানা যায়, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে সাভারের আমিন বাজারের বড়দেশি গ্রামের কেবলারচরে ঘুরতে যায় সাত বন্ধু। ওই সময় ডাকাত সাজিয়ে তাদের ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় তাদের মধ্যে থাকা একজন অল্পের জন্য বেঁচে যায়। ওই ঘটনায় গ্রামবাসীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন, ধানমন্ডির ম্যাপললিফ স্কুলের ছাত্র শামস রহিম শাম্মাম, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল, বাংলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান, মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবীর মুনিব ও বাংলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কামরুজ্জামান। তাদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান।

ওই ঘটনার পর ডাকাতির অভিযোগে আল-আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতির মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক। এছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করে।

২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছরে ৬০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এ ছাড়া ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভিকটিম আল-আমিনকে একই ঘটনায় করা ডাকাতি মামলা থেকে সেদিন অব্যাহতিও দেওয়া হয়।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করে। পরবর্তীকালে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাত আসার ঘোষণা দেয় এবং থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে। বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়।

হত্যা মামলার মোট আসামি ৬০ জন। তাদের মধ্যে নয় জন পলাতক, একজন মারা গেছেন আর বাকি ৫০ জন জামিনে আছে। এদের মধ্যে ওয়াসিম নামে এক আসামি জামিনে থাকলেও অন্য মামলায় কারাগারে আছেন। এ মামলায় ১৪ আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.