পটিয়ায় শশুর বাড়ীর লোকদের নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ

পটিয়া প্রতিনিধি

পটিয়ায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বেবি আকতার (৩৬) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, ১১ ফেব্রুয়ারী রাতে পটিয়া পৌর সদরের গোবিন্দরখিল এলাকার মতির বাপের বাড়িতে বেবি আকতারের স্বামী ওয়াহিদুল আলমের শারিরীক নির্যাতনের শিকার হন গৃহবধূ। এসময় গুরতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থা আশঙ্কা জনক দেখে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে মারা যান। নিহত গৃহবধূ উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের লোকমান হাকিমের মেয়ে। এঘটনায় নিহত গৃহবধুর বড় ভাই খোরশেদ লআলম বাদি হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে পটিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ৩নং আসামী গৃহবধূর দেবর মো. সোহেল (৩১) কে গ্রেফতার করে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে। পলাতক অন্যান্য আসামীরা হলেন, নিহতের স্বামী ওয়াহিদুল আলম, শাশুড়ি দিলুয়ারা বেগম, দেবর মো. রুবেল, ননদ পুষ্পা আকতার। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বেবি আকতারের সাথে পটিয়া পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের জাফর আহমদের ছেলে ওয়াহিদুল আলমের সাথে ২০০৭ সালে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১ ছেলে ১ মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই বেবি আকতারকে প্রায়ই সময় যৌতুকের জন্য পরিবারের সকলেই মিলে নির্যাতন করে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেবি আকতার বাপের বাড়ি থেকে এনে স্বামীকে বিদেশ যাওয়ার জন্য দেন। কিন্তু স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকে স্ত্রীর কোন খোঁজ খবর নেননি। শশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন সময় থাকে মারধর করে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিত। এরপর স্বামী ২০২২ সালের শেষের দিকে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে আসার পর থেকেই পুনরায় যৌতুকের জন্য আবারো নির্যাতন করতে থাকে। সর্বশেষ গত ১১ ফেব্রুয়ারী বেবি আক্তারকে যৌতুকের জন্য মারধর করে পরিবারের লোকজন। এসময় বেবি আকতারকে গুরতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা সহ তার বড় ভাই প্রথমে পটিয়া মেডিকেল তারপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এই ব্যাপারে পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, নির্যাতনের শিকার হয়ে গৃহবধু মারা যাওয়ার ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ৩নং আসামী দেবর সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.