কক্সবাজারে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় সাতকানিয়া সাংবাদিক ফোরাম’র নিন্দা

খরস্রোতা বাঁকখালী নদী দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের ওপর দলবল নিয়ে আব্দুল খালেক চেয়ারম্যানের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাতকানিয়া সাংবাদিক ফোরাম।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সাতকানিয়া সাংবাদিক ফোরাম’র সভাপতি সৈয়দ আক্কাস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহেদুল ইসলাম এক বিবৃতিতে হামলার ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।

নেতারা বলেন, সংবাদ সংগ্রহকালে কোনো সংবাদকর্মী বা সাংবাদিকের ওপর হামলা আইনত অপরাধ। কোনো সংবাদ মাধ্যমের ওপর এভাবে হামলা ন্যাক্কারজনক।

এ ধরনের হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেফতারের আহ্বান জানিয়ে নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দানকারীদের বিরুদ্ধে যে কোনো মূল্যে রুখে দাঁড়ানো হবে।

এদিকে, নদীখেকো খালেক চেয়ারম্যান কর্তৃক সাংবাদিকদের উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন ‘রিপোর্টার্স ইউনিটি কক্সবাজার’।

সংগঠনের সভাপতি এইচএম নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণির স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, খালেক চেয়ারম্যান বাঁকখালী নদীর একজন চিহ্নিত দখলদার। প্যারাবন কেটে নদীর বুকে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি। তার এই অপকর্ম তুলে ধরতে গিয়ে বিভিন্ন সময় সে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালিয়েছিল। বার বার আইনের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে খালেক চেয়ারম্যানের কালো হাত বেড়ে গেছে। তার এই কালো হাত থামানো না গেলে বাঁকখালী নদীর মতো ভবিষ্যতে আরো অনেক নদীর জায়গা গিলে খাবে। তাই খালেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

এর আগে, কক্সবাজার শহরের প্রাচীন নদী বাঁকখালীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে নদীর কস্তুরাঘাট অংশে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (এডিএম) নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী। বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় ২৫০টি অবৈধ ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হয়। পাশাপাশি নদীতে সৃজিত প্যারাবন কেটে দখল করে ঘিরে রাখা টিনের ঘের ও চারপাশের কয়েক শ খুঁটি তুলে ফেলা হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত এই উচ্ছেদ অভিযান চলে।

বেলা দুইটার দিকে উচ্ছেদ অভিযানের ভিডিও চিত্র ধারণ ও ছবি তুলতে গিয়ে দখলদারের হামলার শিকার হন কয়েকজন সাংবাদিক। ১০-১২ জন দখলদার লাঠি হাতে সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে আসেন এবং হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। এ সময় সাংবাদিকদের মারধর করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার ধৃষ্টতা দেখান কয়েকজন দখলদার। দখলদার আবদুল খালেক সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

হামলার শিকার সাংবাদিকেরা হলেন ডিবিসি নিউজ ও বিডিনিউজের জেলা প্রতিনিধি শংকর বড়ুয়া রুমি, আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মাঈন উদ্দিন হাসান শাহেদ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি তৌফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন ক্যামেরাপারসন। দখলদারেরা সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে নিষেধ করতে থাকেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক নুপা আলম বলেন, নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায় দখলদার ও মহেশখালীর বাসিন্দা আবদুল খালেক পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেন। কয়েক মাস আগে ভবনের উত্তর পাশে নদীর জায়গা দখল করে তৈরি করেন কয়েকটি টিনশেড ঘর। দুপুরে টিনশেড ঘর উচ্ছেদ করতে গেলে দখলদারের সঙ্গে সাংবাদিকের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় দখলদারের লাঠি উঁচিয়ে সাংবাদিকদের মারধরের ধৃষ্টতা দেখান। এ সময় আবদুল খালেকের হাতে পিস্তল দেখা গেছে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published.