নিজস্ব প্রতিবেদক
মহান স্বাধীনতা দিবসে সংবাদ প্রকাশের নামে প্রথম আলো পত্রিকায় রাষ্ট্র বিরোধী বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বলে দাবি করে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক সমাজ।
শনিবার (০১ এপ্রিল) গণমাধ্যমের এ প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয় শিক্ষকবৃন্দ। এই বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তি, শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ ২৬ প্রফেসরের নাম রয়েছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি একটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিকে মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তিকে কটাক্ষ করে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ এই প্রতিবেদনটিকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করছে। একই সঙ্গে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক, দুরুভিসন্ধিমূলক সংবাদ প্রকাশের জন্য তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে।’
তারা আরও বলেন, ‘জ্ঞানই শক্তি আর সঠিক তথ্য সেই শক্তির আধার। গণমাধ্যম সঠিক তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে সমাজে জ্ঞানের আলোর মশাল জ্বালাতে সাহায্য করে। আর সংবাদকর্মীরা সাহস ও সততার সঙ্গে সঠিক তথ্য উপস্থাপনে ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ছলচাতুরীর আশ্রয়গ্রহণ করে ও এমনভাবে তথ্য উপস্থাপন করা, যা সাধারণ পাঠকের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি দেশ ও জাতিকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়; তা কোনোভাবেই সাংবাদিকতা ও সংবাদ হতে পারে না। এটি নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
বিগত ২৬ শে মার্চ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে প্রতিবেদক শামসুজ্জামান কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ছলচাতুরীর মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে তৈরির দাবি করে এই শিক্ষকবৃন্দ বলেন, এই প্রতিবেদন অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য। প্রথম আলোর মতো একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এ ধরণের একটি সংবাদ প্রকাশ, পত্রিকাটির দায়িত্বশীলতা ও বস্তুনিষ্ঠতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনটিকে প্রত্যাখ্যান করছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশের জন্য পত্রিকাটির প্রকাশক, সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
তারা বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করে, কভিড মহামারি উত্তর বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রতিকূল অবস্থাকে মাড়িয়ে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের সকল সূচকে ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার লক্ষে দুর্বার গতিতে অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে; তখন স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর এই প্রতিবেদন আমাদেরকে ক্ষুব্ধ, ব্যথিত ও হতাশ করেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ এ ধরনের সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে এবং সাথে সাথে সমাজের দর্পণ ও জাতির বজ্রকন্ঠ সংবাদ মাধ্যমকে প্রকৃত সত্য তুলে ধরে গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সমাজের তথা জাতীয় সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য আহবান জানাচ্ছে।’
বিবৃতি প্রদানকারী শিক্ষকবৃন্দ হলেন, প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ মামুন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, প্রফেসর ড. মাহবুবুল হক, ডিন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক, ডিন, আইন অনুষদ, প্রফেসর মোঃ রুহুল আমিন, লোকপ্রশাসন বিভাগ, প্রফেসর ড. আবুল মনসুর, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, প্রফেসর ড. নাসির উদ্দিন, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, প্রফেসর ড. আনোয়ার সাঈদ, বাংলা বিভাগ, প্রফেসর ড. হেলাল উদ্দিন, ফলিত রসায়ন ও ক্যামিকৌশল বিভাগ প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ, মার্কেটিং বিভাগ, প্রফেসর ড. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স বিভাগ, প্রফেসর ড. দানেশ মিয়া, ইন্সটিটিউট অব ফরেস্ট্রি ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, প্রফেসর ড. নাজনীন নাহার ইসলাম, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ,
প্রফেসর ড. অলক পাল, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, প্রফেসর ড. ফরিদুল আলম, ইন্টারনেশনাল রিলেশনস বিভাগ, প্রফেসর ড. বশির আহমেদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, প্রফেসর নির্মল কুমার সাহা, আইন বিভাগ, প্রফেসর ড. রকিবা নবী, আইন বিভাগ, প্রফেসর ড. জ্ঞান রত্ন, পালি বিভাগ, প্রফেসর ড. এনায়েত হোসেন, দর্শন বিভাগ, প্রফেসর ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, পদার্থবিদ্যা বিভাগ, প্রফেসর ড. মনিরুল হাসান, সমাজতত্ত্ব বিভাগ, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রফেসর মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইন বিভাগ, প্রফেসর ড. উদিতি দাস, ইন্সটিটিউট অব ইডোকেশন এন্ড রিসার্চ
প্রফেসর ড. ইকবাল আহমেদ, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রফেসর ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ।