নিজস্ব প্রতিবেদক
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ‘সন্দ্বীপের বালু ও মাটি খেকো চেয়ারম্যান’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেটিকে ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও প্রতিবেদকের মনগড়া আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার হোসেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রতিবেদনে আমার একটি বক্তব্য লিখা হয়েছে। অথচ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা থেকে আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি এবং বক্তব্যও নেননি। প্রতিবেদক নিজের ইচ্ছেমতো জালিয়াতি করে আমার বক্তব্য লিখেছে। গণমাধ্যম নীতিমালা অনুযায়ী একজন প্রতিবেদক কারও বিষয়ে যদি একটি শব্দও লিখেন সেটির বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া আবশ্যক। আমার জানামতে একজন সাংবাদিকের প্রথম শিক্ষাও এটিই। আরেকটা বিষয় সন্দ্বীপের কোনো বাসিন্দা প্রতিবেদককে সুনির্দিষ্ট করে আমার বিরুদ্ধে বলেননি। ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক’ এবং ‘একাধিক ব্যক্তি জানান’ এভাবে শুরু করে প্রতিবেদক সবগুলো বিষয় নিজের মতো করে সাজিয়ে লিখেছেন। প্রতিবেদকের বাড়ি সন্দ্বীপ উপজেলায় এবং কর্মস্থল ঢাকায়। এ সুবাদে প্রতিবেদক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সন্দ্বীপের অসাধু লোকজনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে এমন প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসের মত মনগড়া ও কাল্পনিক গল্প নির্ভর প্রতিবেদন দৈনিক যুগান্তরের মত প্রকাশিত হওয়ায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
প্রথম কথা হচ্ছে, প্রতিবেদনের প্রতিটি শব্দ ও বাক্যই মিথ্যা। যেখানে প্রতিবেদক একটি বাক্য কয়েকবার উল্লেখ করে বড় করেছেন এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিক সাজার অপচেষ্টা করেছেন। তারপরও সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে আমি ব্যাখ্যা দিচ্ছি- প্রথমে প্রতিবেদক দীর্ঘদিন ধরে সন্দ্বীপে নদী থেকে আগ্রাসী কায়দায় বালু তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে এসব মাটি যাচ্ছে ইউপি চেয়ারম্যানের ইটভাটা, বাগানবাড়ি, হাউজিং প্রকল্প ও শিল্প কারখানায় দোকানে বাড়িতে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, গত এক মাস ধরে নদী খনন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
বর্তমানে আমার কোন ইট ভাটা নেই। কোন সরকারি খাস জমি দখলে নেই বা কখনো ছিলো না। আমার বাগান বাড়ি একটি সমন্বিত কৃষি প্রকল্প। এটি আমার ব্যক্তিগত জায়গায় করা হয়েছে। যেখানে ফল, ফুল, সবজির ও মাছ চাষ করা হয়। প্রতিবেদনে আমার ক্যাডার বাহিনী আছে বলে কাল্পনিক তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। বলা হয়েছে আমার খননযন্ত্র রয়েছে। অথচ এরকম কোনো যন্ত্র আমার কাছে নেই। আমি কখনো বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। ছাত্রজীবন থেকে আমি ছাত্রলীগের রাজনৈতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। আমি কারো থেকে টাকা ধার নিয়ে চেয়ারম্যান নিবাচন করিনি। সন্দ্বীপ গুপ্তছড়া ঘাটে কখনো সিন্ডিকেট বানিজ্য ছিল না এবং এটা নিয়ে এমপি মহোদয়ের সঙ্গে কখনো দূরত্ব ছিল না। বাগান বাড়িতে আমার কৃষি প্রকল্পের কাজের লোকদের থাকার ঘরকে প্রতিবেদক জলসা ঘর বানানো হয়েছে বানোয়াট কথা উল্লেখ করেছেন। আমার নামে-বেনামে সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে তা মিথ্যা।
স্পিড বোট ভাড়া নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তাও মিথ্যা। ১০ বছর আগের ইজারাদার স্পিড বোট ভাড়া নিতেন ৪০০ টাকা। আমি এসে তা করেছি ২৫০ টাকা এখন ১০ বছর পর যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম ৫ গুন বেড়েছে।এর মধ্যে স্পিড বোটে দাম কয়েক গুন বেরেছে। জ্বালানি তেলের দাম আগে ছিলো ৪৪ টাকা বর্তমানে ১৩০ টাকা । আগে প্রতিদিন জেলা পরিষদের জমা ছিলো ৬৯ হাজার টাকা এখন বেড়ে হয়েছে ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকা। তারপরও বর্তমানে ভাড়া নিচ্ছি ৩৮০ টাকা করে। একসময় একটা মরদেহ পারাপারে লাগত ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এখন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মরদেহ পারাপার করা হচ্ছে। যেটি সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকার সুনামের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে।
গত ৪০ বছর ধরে আমি সন্দ্বীপে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া মগধরা ইউনিয়নের বাসিন্দারা আমাকে দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। এলাকাবাসীর ঋণ শোধ করতে আমি কাজ করে যাচ্ছি। সামনেও করে যাব ইনশাআল্লাহ। আমার প্রতি জনগণের এমন ভালোবাসায় একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিবেদক দিয়ে মিথ্যা এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।